পোষ্য কোটা নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল সকাল ১০টার মধ্যে এ কোটা সম্পূর্ণ বাতিল না করলে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিহবন মার্কেটে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার।
তিনি বলেন, আমরা পোষ্য কোটা নিয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ১০টা পর্যন্ত সময় আছে। তিনটি দাবি প্রশাসন মেনে না নেয়া পর্যন্ত প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ থাকবে। আমাদের দাবি, পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলসহ চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা এবং ফ্যাসিস্ট দুই শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর পদে নিয়োগের জবাব জনসম্মুখে দিতে হবে।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেছেন, 'ছাত্রছাত্রীদের কোনো অন্যায় আবদার মানার দায় আমার নেই। যেটুকু যৌক্তিক তা মেনে নেয়া হয়েছে। কোটা ইস্যু নিয়ে আর কোনো ধরনের যন্ত্রণা চাই না। এরপরেও বিশৃঙ্খলা হলে সেটা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার হিসেবে দেখবো।'
তিনি বলেন, 'বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে কেবল সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। তারা একটি বৃত্তের মধ্যে আটকা পড়ছে। সুইপারের সন্তান সুইপার কিংবা প্রহরীর সন্তান প্রহরী হয়। এমন শত শত দৃষ্টান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। তাদেরও একটুখানি সুযোগ থাকা দরকার। এই কারণেই আপাতত ১ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে।'
সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন আম্মার লিখিত বক্তব্যে বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূল বিষয়ই ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার। কিন্তু বিপ্লবের পরও এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটার যৌক্তিক সংস্কার হয়নি, বরং একটি অযৌক্তিক, অবৈধ কোটা রেখে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে বিগত এক মাস যাবত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ এবং প্রশাসনকে সময় দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আগামী ৫ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক আবেদন শুরু। ফলে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত এ কোটা বাতিলসহ তিনদফা দাবি আদায়ে সাত দিনের আলটিমেটাম দেয়া হয়। সেই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১% কোটা রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি এবং আমাদের আল্টিমেটামের ওপরেই অনড় আছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সজিব ও অর্থনীতি বিভাগের মুমিনুল হকসহ প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী।
এরআগে, ১ জানুয়ারি বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জরুরি সভায় সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীর সন্তানের জন্য ২০২৪-২৫ সেশনে ১% পোষ্য কোটা রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম