জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিতের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে অনশন কর্মসূচির বিষয়টি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন দ্বিতীয় ক্যাম্পাস আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী একাধিক শিক্ষার্থী।
আমরণ অনশনের বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন ফেরদৌস শেখ বলেন, আগামী রবিবার সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি শুরু করব আমরা। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে। আমরা এবার আর কোনো আশ্বাসে দাবি থেকে পিছ পা হব না।
এ শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ইস্যুতে তিন দফা দাবিতে গত ১১ নভেম্বরে সচিবালয়ে ঘেরাও করে আন্দোলন করেছে তারপরও কোনো সমাধান হয়নি। প্রশাসন শুধু আশ্বাসের গল্প শুনিয়ে যায়। এবার আর কোনো আশ্বাস নয় চূড়ান্ত ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা অনশন থেকে উঠব না। এ-র ফলে কোনো শিক্ষার্থীর কিছু হলে এ দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।
আমরণ অনশনের ডাক দেওয়া আরেক শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, আমরা এবার নিজেদের সর্বস্ব মিলিয়ে দিয়ে রবিবার থেকে ভিসি ভবনের সামনে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর না করার প্রতিবাদে এবং অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবিতে অনশনে বসছি। এবার এ বিষয়ে শেষ না দেখা পর্যন্ত লড়াই করে যাব।
অপশনের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আতিকুর রহমান তানজিল নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জবিয়ানরা জবির ইতিহাসে সর্ববৃহৎ আন্দোলনও করেছে। জবি প্রশাসনের আশ্বাসের প্রতি আস্থা রেখে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন বন্ধ করে আল্টিমেটাম দিয়ে রাখলেও প্রশাসন দৃশ্যমান কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের প্রশাসন আমাদেরই আস্থা হারিয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে আর লিয়াজোঁ নয়।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন একেএম রাকিব বলেন, রেজ্যুলেশন আসার পর আমরা প্রশাসনকে যৌক্তিক সময় দিয়েছি কিন্তু তারা কোনো ফলাফল দেখাতে পারে নি। এজন্য আমরা আর অপেক্ষা করতে চাই না। যতদিন সেনাবাহিনীকে কাজ না দিচ্ছে ততদিন আমরা আমরণ অনশন করবো।
আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তরের জন্য আমরা যখন সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম গত ১২ নভেম্বর। দুই মাস পার হলেও আমরা কোনো দৃশ্যমান অগ্রগ্রতি পাইনি। প্রশাসন ও সচিবালয় থেকে আমাদের কোনো অগ্রগতি জানানো হয়নি। এজন্য আমরা অনশনের মত কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তরসহ তিন দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তরে বাধা নেই। এ বিষয়ে সহযোগিতা করবে মন্ত্রণালয়। তবে দুই মাস পেরোলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
বিডি প্রতিদিন/আশিক