সরকারের দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচিতে সমতা আনা, সুষম বণ্টন নিশ্চিত ও বৈষম্য দূর করতে শুরু হচ্ছে জরিপ কাজ। ‘ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেইজ’ নামে প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রাম বিভাগে আগামী ১৪ জানুয়ারি থেকে গণনা কাজ শুরু হয়ে চলবে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
পরিসংখ্যান ব্যুরো চট্টগ্রাম অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিসংখ্যান ব্যুরো ‘ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেইজ’ (এনএইচডি) প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সাকল খানা, পরিবারের আর্থ-সামাজিক ও জনমিতিক তথ্য সম্বলিত একটি ডাটাবেইজ প্রস্তুতের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ প্রকল্পের অধীনে আগামীকাল ৯ জানুয়ারি থেকে ১১ পর্যন্ত সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ১৪ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে গণনা কাজ। জরিপকাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এক হাজার ৪৯০ জন সুপারভাইজার, আট হাজার ১১৮ জন গণনাকারী, ১০ জন জেলা সমন্বয়কারী এবং ৩১১ জন জেনাল অফিসার।
পরিসংখ্যান ব্যুরো চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘সরকার দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রায় ১৪৫টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু ২০১০ সালে বিবিএস পরিচালিত এক জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, একদিকে একই ব্যক্তি একাধিক কর্মসূচির সুবিধা ভোগ করছে, অন্যদিকে অনেক দরিদ্র, যোগ্য পরিবার কোন কর্মসূচিতেই অন্তর্ভূক্ত হতে পারছে না। ফলে দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচিতে একটি সমস্যা দেখা দেয়। তাই সরকারি বণ্টনে সমতা আনতে ‘ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেইজ’ তৈরি করা হচ্ছে। গণনার সময় সংশ্লিষ্টদের জাতীয় পরিচয় পত্রও সংগ্রহ করা হবে। তৈরিকৃত ডাটাবেইজটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে লিংক করা হবে।’
পরিসংখ্যান ব্যুরো সূত্রে জানা যায়, সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত ইমপ্লিমেন্ট জেনারেশন ফর দ্যা পুয়রেস্ট (ইজিপিপি), ফুড ফর ওয়ার্ক (এফএফডব্লিউ), ভুলনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএিফ), টেস্ট রিলিফ (টিআর), গ্র্যাচুইটাস রিলিফ (জিআর) সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপকারভোগী হিসাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বঞ্চিত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমতা আনা হবে। একই সঙ্গে প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সকল খানার তথ্য সংগ্রহপূর্বক প্রতিটি খানার আর্থ-সামাজিক অবস্থা নির্দেশক স্কোর সম্বলিত একটি ডাটাবেইজ তৈরি করা, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি, প্রকল্পে সঠিকভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে লক্ষ্যভুক্ত করা এবং লক্ষ্যভুক্তির কৌশল সহজতর করা।
উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান বলেন, প্রকল্পের অধীনে দেশের প্রায় ৩ কোটি ৬৩ লক্ষ খানা হতে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে খানার গৃহের ধরণ, খানার সম্পদের পরিমাণ, খানার মালিকানাধীন জমির পরিমাণ, খানার সদস্যগণের শিক্ষার স্তর, সদস্যগণের পেশার ধরণ, খানা কর্তৃক ব্যবহৃত টয়লেটের ধরন/মান ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তথ্য সংগ্রহকালে ব্যক্তির পরিচিতি নিশ্চিত হওয়ার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জন্মনিবন্ধন সনদ দেখে নম্বর লিপিবদ্ধ/এন্ট্রি করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার