ঘটনার পর চারদিন অতিবাহিত হলেও গ্রেফতার হয়নি চট্টগ্রামের যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিন খুনের হত্যাকারীরা। ঘটনার পরেই নামে মাত্র দুইজনকে গ্রেফতার করলেও এখনও পলাতক রয়েছে ঘটনায় সরাসরি জড়িত এমন অভিযুক্ত মামলার আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। মামলার প্রধান আসামি হাজি ইকবাল গত বুধবার গ্রেফতার হয়েছে বলে এলাকায় এমন গুঞ্জন রটে যায়।
এ নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের অনেকেই মন্তব্য করেন, খুনীদের এবার রক্ষা নেই। সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে। আসামী যেই হোক না কেন খুনীদের বিচার হবেই। এ হত্যাকাÐের প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির পাশাপাশি ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে এলাকাবাসী ও থানা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনও।
তবে ঘটনার তিন দিনেও আসামীরা গ্রেপ্তার না হলেও পুলিশের গ্রেপ্তারের তৎপরতা রয়েছে বলে জানান নিহত মহিউদ্দিনের ভাই আবু ইউসুফ। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সকালেও পুলিশের সাথে কথা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান মামলার বাদি। তবে ঘটনার মূল আসামীরা রক্ষার জন্য বিভিন্ন কৌশল করছেন বলেও জানান তিনি।
বন্দর থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা বিকাশ সরকার বলেন, আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য মাঠে কাজ করছি। চলছে নির্ঘম পরিশ্রমও। একেবারেই ক্লান্ত হয়ে গেছি। গ্রেপ্তারের গুঞ্জন বিষয়ে তিনি বলেন, আমিও শুনেছি বেনাপুলে ধরা পড়েছে। আসলে খবরটি সঠিক না। তবে মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
মহিউদ্দিনের জানাজায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছিলেন, সে (যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিন) এমন কী অপরাধ করেছে তাকে দিনে দুপুরে কুপিয়ে মারতে হবে? তিনি বলেন, যারা অপরাধী তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যারা এ হত্যাকান্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের প্রতি।
চসিক ৩৮ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যুবলীগের ত্যাগী ও সক্রিয় কর্মী ছিল মহিউদ্দিন। দলের জন্য কাজ করতে সে কোন দিন পদ-পদবীর লোভও করেনি। দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ডসহ যে কোন সভা, সমাবেশ ও মিছিলে উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। এ হত্যার বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীসহ আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করবো। অভিন্ন কথা বলেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগর সভাপতি হাসান মুরাদও।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ সোমবার দিন-দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর মেহের আফজাল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে একটি সভা চলাকালে মহিউদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। নিহত মহিউদ্দিন দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর নতুন দুই নম্বর সাইডের মঈনু মাস্টার বাড়ির মৃত আবু ইব্রাহিমের ছেলে। এ ঘটনায় নিহত মহিউদ্দিনের মা নূর নেছার বেগম বাদি হয়ে বির্তকিত আওয়ামী লীগ নেতা হাজি ইকবালকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বন্দর থানায়। এতে অভিযান চালিয়ে মুছা ও তানভীর নামে দুইজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার