১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:১৬
সেমিনারে বক্তারা

'হালদা রিভার কনজারভেশন কমিশন' গঠন জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

'হালদা রিভার কনজারভেশন কমিশন' গঠন জরুরি

বহুমাত্রিক অত্যাচার থেকে অসুস্থ হালদা নদীকে বাঁচাতে ‘হালদা রিভার কনজারভেশন কমিশন’ গঠন জরুরি। এটি গঠন হলে প্রাকৃতিক নদীটি রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে কঠোর তদারকির আওতায় আসবে এ নদী। তাছাড়া দেশের স্বার্থে হালদা নদীকে ‘জাতীয় নদী’ ঘোষণা করাও এখন সময়ের দাবি।    

আজ বুধবার দুপুরে নগরের একটি লার্নিং সেন্টারে পানি অধিকার ফোরামের সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি) এর যৌথ উদ্যোগে ‘হালদা নদী রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ সব কথা বলেন। 

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে হালদা নদীর সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া। সভাপতিত্ব করেন এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। বক্তব্য রাখেন চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের গবেষণা কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন, নদী পরিব্রাজক দলের সভাপতি এস এম মুজিব, হালদা নদীর ডিম আহরণকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর, শ্রী জলরাম দাস প্রমুখ।  

মূল প্রবন্ধে চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘অবৈধ বালি মহাল, ইঞ্জিনচালিত বোট, তামাক চাষের কীটনাশক,  পোল্ট্রি বর্জ্য, রাবার ড্যামের কারণে পানির প্রবাহে বাধা, অপরিকল্পিত স্লুইস গেইট নির্মাণ, কারেন্ট জালে মা মাছ নিধন এবং আবাসিকের গৃহস্থালি বর্জ্যসহ বহুমাত্রিক অত্যাচারে হালদা নদীর এখন বিভীষিকাময় অবস্থা। ফলে হালদা নদী তার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে ক্রমশ। তবে আশার কথা, এ নদী রক্ষায় সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ সব উদ্যোগ যদি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে হালদা নদীকে দূষণ থেকে রক্ষা করা যাবে।’   

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘হালদা নদীর বর্তমান অবস্থা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। সরকারও এ নদীর গুরুত্ব ও সম্ভাবনা বুঝতে পেরেছে। সরকার ঠিক করবে হালদা রক্ষায় করণীয়। তবে এ জন্য স্থানীয় জনসাধারণ এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে একযোগে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি সংস্থালোকে স্থানীয় জনগণ এবং নদীর গুরুত্বকে প্রধান্য দিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সাধারণত বেলা জনসম্পৃক্ত কাজগুলোতে আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে। তাই এখানে যদি সরকার কোন দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করে তাহলে আমরা জনস্বার্থে বেলা আদালতে যাবে।’  

এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, অসুস্থ হলে মানুষ চিকিৎসকের কাছে যায়। নদী প্রকৃতি অসুস্থ হলে মানুষকেই তার দায়িত্ব নিতে হয়। উপমহাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী এখন বড় অসুস্থ। অসুস্থ এই নদীকে বাঁচাতে হবে। তাই হালদা নদীকে বাঁচাতে আমাদের সকলকে সমন্বিত প্রয়াসে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই।’

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর