বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। প্রাকৃতিকভাবে চট্টগ্রামের গুরুত্ব অনেক। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সরকারি-বেসরকারি খাত সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা তৈরি করা হবে।’
বুধবার বিকালে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) ও বিডা’র যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ খাতে ব্যবসায়ীদের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও দূরীকরণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চেম্বার পরিচালক একেএম আকতার হোসেন ও সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম, বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের নির্বাহী পরিচালক একেএম মহিউদ্দিন আজাদ, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, জাপানের অনারারী কনসাল জেনারেল মো. নুরুল ইসলাম, কাস্টমস হাউস’র যুগ্ম কমিশনার সাধন কুমার কুন্ড, প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বিকেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান, উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, বিএসআরএম’র এমডি আমীর আলীহুসেইন, কনফিডেন্স সিমেন্ট’র এমডি জহির উদ্দিন আহমেদ ও শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন’র পরিচালক মো. আবদুল্লাহ জহির প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ক্ষমতায়ন, ন্যূনতম কর ও অগ্রিম কর পুনর্বিবেচনা, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ, বিমানবন্দরে বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের হয়রানী লাঘব, সঞ্চয়পত্রের সুদ পুনর্বিবেচনা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন, আঞ্চলিক দপ্তরসমূহের ক্ষমতায়ন ও বাণিজ্যিক রাজধানী বাস্তবায়ন, কাস্টমস’র লোকবল বৃদ্ধি, আমদানি নীতি ও এইচএস কোডের অসামঞ্জস্যতা দূরীকরণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনসমূহ আধুনিকায়ন, বিনিয়োগে দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা গ্রহণ ও ঘন ঘন নীতি পরিবর্তন না করা, ভ্যাট নীতিমালা যুগোপযোগী করা, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন লাইসেন্সের মেয়াদ কমপক্ষে ৫ বছর করা, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরিবার নিয়ে বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টি করা, অগ্রিম কর সমন্বয়সহ সামগ্রিক কর ব্যবস্থা আরো ব্যবসাবান্ধব করা, ইজ অব ডুয়িং বিজনেস এর স্থানীয় মান নির্দেশক নির্দিষ্ট করা, ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে আসল ও সুদের হিসাব আলাদা করতে বিডার কাছে অনুরোধ জানান।
এসব দাবির প্রেক্ষিতে বিডা চেয়ারম্যান সরকারি দফতরসমূহের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে উত্থাপিত সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে হলে উদ্যোক্তাদের অনেকগুলো লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন, পারমিশন ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ এবং বেশ কষ্টসাধ্য। তাই এখন সময়ের দাবি ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা। তাছাড়া কোয়ালিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৮ লেনে উন্নীত করা, রেলপথে পণ্য পরিবহনে আরো বেশি ওয়াগন সরবরাহ করা, বে-টার্মিনাল নির্মাণে নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ, দেশে এবং বিদেশে ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি চালু করা, উদ্যোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশের উপর গুরুত্বারোপ করা জরুরি।’
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম