১৯ মে, ২০২০ ১৬:৩০

সুপার সাইক্লোন আম্ফান : জাহাজশূন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য উঠানামা বন্ধ

ক্ষয়-ক্ষতি কমাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

সুপার সাইক্লোন আম্ফান : জাহাজশূন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য উঠানামা বন্ধ

সুপার সাইক্লোন আম্ফানের সম্ভাব্য আঘাতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কমাতে চট্টগ্রাম বন্দরের মূল জেটিগুলোও জাহাজশূন্য করা হয়েছে। ‘বুম আপ’ বা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে ১৪টি গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের যন্ত্রপাতি।

এর আগে সোমবার থেকে বহির্নোঙরে জাহাজ থেকে লাইটার জাহাজে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জাহাজশূন্য বন্দরের জেটিতে সব ধরনের কার্যক্রম ও পণ্য উঠানামা বন্ধ হয়ে গেছে। যে কোনো ঝুঁকি এড়াতে লাইটার জাহাজগুলো কর্ণফুলীর উজানে এবং বহির্নোঙরে থাকা প্রায় ১০০ জাহাজকে সার্বক্ষণিক ইঞ্জিন চালু রাখার এবং প্রয়োজনে গভীর বঙ্গোপসাগরের অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে।   

উল্লেখ্য, আম্ফানের কারণে আবহাওয়া অফিস পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বন্দর থেকে। আম্ফান এখন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাত্র ৮৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে জেটির সর্বশেষ জাহাজটি বহির্নোঙরে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে জেটিতে কোনো জাহাজ নেই। গ্যান্ট্রি ক্রেনগুলো ঝড়ো হাওয়ায় যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় বুম আপ অবস্থায় অ্যাংকর করা হয়েছে। তবে ইয়ার্ড থেকে কনটেইনার ডেলিভারি এখনও দেয়া হচ্ছে। এমনিতেই করোনা পরিস্থিতির কারণে বন্দরে কনটেইনার ও জাহাজজট চলছিল তার উপর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সম্ভাব্য হানা বন্দরের এই জটকে আরো দীর্ঘায়িত করেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া আসন্ন ঈদের কারণেও বন্দরে কার্যক্রমে ধীরগতি নেমে আসে। সবমিলে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি রয়েছে বলে জানান বন্দর কর্মকর্তারা।

বন্দরের উপ-সংরক্ষক ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম জানান, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দরের জেটি থেকে ১৯টি জাহাজ সোমবার বিকাল ৪টা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বহির্নোঙরে থাকা ৫১টি বড় জাহাজ গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৮, ১৫ নম্বর খাল এবং গুপ্তখালের লাইটার-কোস্টার ভ্যাসেলগুলো বাংলাবাজার থেকে শাহ আমানত সেতুর উজানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব টাগ ও নৌযানগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।    

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, আবহাওয়া অধিদফতরের সতর্ক সংকেত অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অ্যালার্ট-৩ জারি করেছে। তিনটি কন্ট্রোল রুম (নৌ-বিভাগ-০৩১-৭২৬ ৯১৬, পরিবহন বিভাগ-০৩১- ২৫১৭৭১১, সচিব বিভাগ -০১৭৫১ ৭১ ৩০ ৩৭) খোলা হয়েছে।

বন্দরের জেটি থেকে জাহাজ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ মূল্যবান সব যন্ত্রপাতি বুম আপ করে রাখা হয়েছে। সবমিলে আমরা সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর