এবার আমন মৌসুমে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বীজ ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৬২ টন। এরই মধ্যে এ আমন বীজ সংগ্রহ শুরু করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। তবে কৃষকরা যথাযথ ভাবে সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ না করার কারণে অনেক বীজ নষ্ট আসছে। তাই বীজ ধান ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছে প্রতিষ্টানটি। এভাবে চলতে থাকলে পরবর্তীতে বীজ সংগ্রহে সংকটের মুখোমুখি হতে পারে প্রতিষ্ঠানটি।
বিএডিসির (কগ্রো) উপ-পরিচালক মো. আবু সাঈদ হাসান লতিফ বলেন, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারে সমাপ্ত আমন মৌসুমের বীজ সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। অনেক কৃষক বীজ ধান নিয়ে এসেছেন কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত আদ্রতা কিংবা চিটা থাকার কারণে অনেককে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় সম্ভবত বীজ সংগ্রহে সংকট হবে না। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, কৃষকদের বীজ ধান কাটার পরে যথাযথ নিয়ম মেনে মাড়াইকরা, শুকানো এবং প্রক্রিয়াকরণে কাজ করতে হবে। নয়তো নিয়মের বাইরে আমরা বীজ কিনতে পারবো না। এতে ক্ষতির মুখে পড়বেন কৃষকরাই।
বিএডিসি’র দেয়া তথ্যমতে, চট্টগ্রাম অঞ্চলের দুই জেলায় আমনবীজ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫৮১ একর জমিতে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন অনেক বেশী হলেও সর্বোচ্চ ১ টন ধান বীজ সংগ্রহ করতে পারে বিএডিসি। এই অঞ্চলের দুই জেলায় ৫৬২ টন আমন বীজ সংগ্রহের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে যার মধ্যে চট্টগ্রামে ৪৩৪ টন এবং কক্সবাজার জেলায় ১২৭ টন। দুই জেলায় মোট ১০০ জন কৃষকের কাছ থেকে এই বীজ ধান সংগ্রহ করা হবে। যার মধ্যে চট্টগ্রামের ৮৩ জন এবং কক্সবাজারের ১৭ জন আছেন। চট্টগ্রাম জেলায় ৮৩ জন নিবন্ধিত কৃষকের কাছ থেকে ৮ জাতের ৪৩৪ টন আমন বীজ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে বিআর-১০ জাত ২০ একর, ব্রিধান-১১ জাত ২৫ একর, বিআর-২২ জাত ৮৬ একর, বিআর-২৩ জাত ৭০ একর, ব্রিধান-৪৯ জাত ১৩৪ একর, ব্রিধান-৫১ জাত ৪০ একর, ব্রিধান- ৭৬ জাতটি ৯ একর, ব্রিধান-৮৭টি ৫০ একর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলার ১৭ জন কৃষক ১২৭ একর জমিতে ৪ জাতের আমন জাতের বীজ ঊৎপাদনের বিএডিসির সাথে চুক্তি বদ্ধ হয়েছিলেন। যার মধ্যে যার মধ্যে বিআর-২২ জাতটি ৭১ একর, ব্রিধান-৪৯ জাত ৩১ একর, ব্রিধান-৫২ জাতটি ২০ একর এবং ব্রিধান-৮৭ জাতটি ৫ একর জমিতে আমন বীজ আবাদ করা হয়।
বীজের দাম সাধারণত বাজারের সাধারণ দামের থেকে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা বেশী দেওয়া হয় নিবন্ধিত কৃষকদের। যার কারণে বীজ ধান উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষক পর্যায়ে। তবে অনেকে ধান কাটার পরে ধান মাড়াই করা কিংবা শুকানোর সময়ে শ্রমিকের মজুরী বাঁচাতে মাঠেই খড়সহ ধান শুকান। এত ধানে কালো দাগ চলে আসা, আদ্রতা কম এবং ধানের চেহারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে অনেকের ধান ফেরত দিতে হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম