৩১ মে, ২০২৩ ২১:৪৪

চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমাবেশে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কাউন্সিলর আহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমাবেশে দুই
পক্ষের সংঘর্ষে কাউন্সিলর আহত

দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর পর চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সামনে চট্টগ্রাম ১৪ দলের ডাকা সমাবেশে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকালে পৌনে পাঁচটার দিকে সমাবেশে স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। ‘বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ’ প্রতিপাদ্যে এই গণসমাবেশ আয়োজন করা হয়।

কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে সমাবেশে ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে দুইপক্ষ ইট পাটকেল ছুঁড়লে কাউন্সিলর ওয়াসিমের মাথায় লেগে তিনি আহত হন। এতে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার একটু পর আবারও সমাবেশ শুরু হয়।

এদিকে সংঘর্ষ বেধে গেলে চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বায়ক খোরশেদ আলম সুজনকে সংঘর্ষে জড়িতদের মাইকে চিৎকার করে শাসন করতে দেখা যায়। তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মিটিংয়ে সবাই নেতার বক্তব্য শুনতে এসেছে, তোদের মারামারি দেখতে কেউ আসেনি। মারামারি করতে চাইলে লালদীঘির মাঠে মারামারি করার ব্যবস্থা করে দেব। এটা মারামারি করার জায়গা নয়।’

পরে সুজন সাংবাদিকদের বলেন, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে কিছুক্ষণ পর সবাই শান্ত হয়ে সমাবেশে অংশ নেয়।

 ১৪ দলের সমন্বায়ক খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্কাস পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি বলেন, একটি যুদ্ধে জয়ী হতে যেমন সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীর দরকার হয় তেমনি একটি দলের আদর্শ-উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সুশৃঙ্খল কর্মীবাহিনী। এই সুশৃঙ্খল কর্মীরা দলের শক্তি ও ঐক্যের ভিত্তি। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে এক মঞ্চে এসেছি, আমাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী অপশক্তিকে বিনাশ করা। সেই লক্ষ্যে সবার এক থাকা উচিত।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের চট্টগ্রাম নগরের সাধারণ সম্পাদক জসিমুদ্দিন বাবুল বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার একটি কুখ্যাত কালোবাজারি ও সন্ত্রাসী লুৎফুর রহমান বাবরকে দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তারই নেতৃত্বে এদেশে অনাচার ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। এমনকি শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টাও হয়েছে। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যদি আবারও ক্ষমতায় না আসে এ দেশ পাকিস্তান হয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম জেলা ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হানিফ বলেন, আমরা রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতায় একই মঞ্চে সমবেত হয়েছি। এই জোট কোনো নির্বাচনমুখী জোট নয়। এই জোট স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করতে একটি মুক্তমঞ্চ।

সভায় অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সাম্যবাদী দলের নেতা অমূল্য বড়য়া, গণআজাদী লীগের নজরুল ইসলাম আশরাফি, ন্যাপ মোজাফ্ফরের ফয়েজ উল্লাহ মজুমদার, জেপি ডা. বেলাল মৃধা, গণতন্ত্রী পার্টির স্বপন সেন বক্তব্য রাখেন।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর