রাজশাহী মহানগরীর আশরাফের মোড়ে মঙ্গলবার ভোররাতে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত যুবক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডে জড়িত জেএমবি সদস্য নজরুল ওরফে হাসান ওরফে বাইক হাসান (২৬)। এই বাইক হাসানসহ অধ্যাপক রেজাউল হত্যার অপর আসামি শরিফুলকে ধরিয়ে দিতে গত শুক্রবার এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিল রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর উপশহর এলাকায় ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের ফরম বিতরণকালে আরএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার ভোররাতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত যুবক সেই জেএমবি ক্যাডার বাইক হাসান। তার বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনারহার গ্রামে। বাবার নাম আব্দুল্লাহ মিয়া ওরফে মুন্না।
আরএমপি কমিশনার বলেন, বাইক হাসান জেএমবির দুর্ধর্ষ ক্যাডার। তার কাজ হলো, জেএমবির বিভিন্ন কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ঘাতকদের মোটরসাইকেলে আনা নেওয়া করা। আর এ জন্যই সে জেএমবি ক্যাডারদের কাছে বাইক হাসান নামে পরিচিতি পেয়েছে।
আরএমপি কমিশনার আরও জানান, মঙ্গলবার সকালেও রাজশাহীতে জেএমবি সদস্যদের আরও একটি ‘অঘটন’ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। তাই সোমবার রাতেই কয়েকজন সদস্য রাজশাহীতে আসে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাদের আটক করতে মঙ্গলবার ভোররাতে নগরীর আশরাফের মোড় এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি ছুঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও এ সময় গুলি চালালে বাইক হাসান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, গুলি ও ককটেলের খোসা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, হাসান এর আগে আরও ১১টি হত্যা মিশনে অংশ নিয়েছে।
আরএমপির মুখপাত্র সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতে খায়ের আলম জানান, বাইক হাসান নিহত হওয়ার পর তার লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে রাখা ছিল। বুধবার সকালে বাইক হাসানের পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে শনাক্ত করেছেন। দুপুরের মধ্যেই তারা লাশ নিয়ে যাওয়ার কথা।
গত ২৩ এপ্রিল সকালে রাজশাহী মহনগরীর শালবাগান এলাকায় নিজ বাসার সামনে থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে রাবির অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষকের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। আর গ্রেফতার হওয়ার পর হাফিজুর নামে এক শিবিরকর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব
