লাল, হলুদ, সোনালী, বেগুনী এবং লাল-সাদা রংয়ের ফুলে সেজে উঠেছে প্রাচ্যের ভেনিস বরিশাল। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, স্কুল-কলেজ চত্বরে ও পার্কে লাল রংয়ের কৃষ্ণচূড়া, হলুদ রংয়ের রাঁধাচূড়া, সোনালী রংয়ের সোনালু, বেগুনী রংয়ের জারুল এবং লাল-সাদা রংয়ের জাপানি ক্যাসিকা ফুলের সৌন্দর্য্যে বিমোহীত পথচারী-দর্শনার্থীরা। শহর এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন সৌন্দর্য বাড়াতে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের আরও সক্রিয় ভূমিকা চান সৌন্দর্য পিপাসুরা। শহরসহ সর্বত্র সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছ লাগাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।
বরিশাল নগরীর ঐতিহ্যবাহী বঙ্গবন্ধু উদ্যান লাগোয়া দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের লেকের দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে বেশ কয়েকটি গাছের কৃষ্ণচূড়া। শুধু দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়েই নয়, বঙ্গবন্ধু উদ্যানের পূর্বপাশের লেকের পাড়েও সারি সারি গাছে থোকায় থোকায় সোনালু ফুল মুগ্ধ করে পথচারী দর্শনার্থীদের। উদ্যানের উত্তর-পূর্ব দিকের লাল কৃষ্ণচূড়াও যেন অকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছে তার রূপ।
শুধু বঙ্গবন্ধু উদ্যানেই নয়, রাজাবাহাদুর সড়ক, প্লানেট পার্ক, কালীবাড়ি রোডের শহীদ কাঞ্চন পার্ক, বিএম কলেজ, হাতেম আলী কলেজ, বরিশাল কলেজ, শেরে-ই বাংলা মেডিকেল ও সদর গার্লস স্কুল চত্বর, নথুল্লাবাদ ব্রিজ, রাখালবাবুর পুকুর পাড়, বটতলা মসজিদের পেছনে, স্টিমারঘাট কীর্তনখোলা নদীর তীরে, পুলিশ লাইনের সামনে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্ত্বর, বান্দ রোড, মুক্তিযোদ্ধা পার্কসহ সর্বত্র দাঁড়িয়ে থাকা গাছের কৃষ্ণচূড়া, সোনালু ও জারুল ফুল মানুষের মনের
সৌন্দর্য ক্ষুধা মেটাচ্ছে।
এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের পূর্বপাশে পাশাপাশি দূরত্বে সারি সারি সোনালু, কৃষ্ণচূড়া ও জারুল ফুল এবং বাংলাবাজার-বটতলা সংযোগ সড়কে (আলেকান্দা রোড) একই স্থানে সোনালু, জারুল ও কৃষ্ণচূড়া ফুল এবং বিএম কলেজ ক্যাম্পাসের পূর্বদিকে রাঁধাচূড়া ও কৃষ্ণচূড়া এবং জারুল ফুলের সৌন্দর্য্য আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
কালীবাড়ি রোডের শহীদ কাঞ্চন পার্কের লাল-সাদা রংয়ের বিরল প্রজাতীর জাপানী ক্যাসিকা ফুল যেন সৌন্দর্যকে আরা সমৃদ্ধ করেছে।
পথচারী-দর্শনার্থীরা জানিয়েছেন, সারি সারি ফুলের সৌন্দর্য মন প্রফুল্ল রাখে। আগামীতে সারা বছর পর্যায়ক্রমে যেসব ফুল ফোটে সেই সব ফুলগাছ পরিকল্পিতভাবে বরিশাল নগরীসহ সর্বত্র লাগানোর জন্য সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সুব্রত কুমার দাস বলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ফোটে পলাশ ফুল, বর্ষাকালে কদম, এরপর শিউলি ফুল, বোতল ব্রাশ এবং মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ফোঁটে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, সোনালু ও জারুল।
উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ড. সুব্রত বলেন, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, সোনালু ও জারুল মূলত সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছ হিসেবেই পরিচিত। সৌন্দর্য ছড়ানোই এর কাজ। পরিকল্পিতভাবে এই গাছগুলো লাগাতে পারলে সারা বছরই ফুলে ফুলে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠতে পারে বরিশাল শহরসহ সর্বত্র।
সৌন্দর্য বাড়াতে খালের পাড়ে-নদীর তীরে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে এসব গাছ লাগাতে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।
বিডি প্রতিদিন/১৭ মে, ২০১৮/ফারজানা