মজুরী কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯দফা দাবিতে খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট চলবে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত। এতে খুলনা ও যশোরের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
এদিকে একই দাবিতে পাটকল শ্রমিকরা সোমবার সকাল ৮টা থেকে চারঘন্টার রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। শ্রমিকরা নগরীর নতুন রাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক, নতুন রাস্তা মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সড়ক, বিআইডিসি সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করেন। তারা মিছিল, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সমাবেশ করেন। শ্রমিক আন্দোলনে খুলনার শিল্পাঞ্চল উত্তাল হয়ে উঠেছে। এছাড়া সড়ক অবরোধ থাকায় মহাসড়কের যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ ও রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষেদের ডাকে এ ধর্মঘট পালিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট জুটমিলের সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘মজুরি ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে শ্রমিকদের ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হয়েছে। দাবি মানা না পর্যন্ত আমরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ধর্মঘটের পাশাপাশি প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা করে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ থাকবে। এরপর বিরতি দিয়ে আগামী ২৫ এপ্রিল গেটসভা এবং ২৭, ২৮ ও ২৯ এপ্রিল ৭২ ঘণ্টার পাটকল ধর্মঘটসহ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এদিকে পাটকল শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হওয়ায় ভোর ৬টা থেকে খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। একই সঙ্গে নতুন রাস্তা মোড়ে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করায় খুলনা-যশোর মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে অবরোধ শেষে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উল্লেখ্য, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত খালিশপুর, দৌলতপুর, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, ইস্টার্ন, আলীম, জেজেআই ও কার্পেটিং ৯টি জুট মিলে প্রায় ৩৩ হাজার শ্রমিক রয়েছে। তাদের ৮ থেকে ১০ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। মজুরি না পেয়ে শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। ৯ দফা দাবি আদায়ে গত ৬ মার্চ ঢাকায় বিজেএমসির সাথে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনা সফল না হওয়ায় টানা কর্মসূচি ঘোষণা করে শ্রমিকরা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন