প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বরিশালে জমজমাট ইফতারির বাজার। মুসল্লিরা বিকেল থেকেই ভিড় করেন এই বাজারে। কিনে নেন পছন্দের বাহারি ইফতার সামগ্রী। বরিশালের ইফতারির বাজারে প্রথম দিকে পাওয়া ইফতার সামগ্রী সতেজ এবং মান সম্পন্ন বলে খুশি ক্রেতারা। দাম নিয়েও মাথা ব্যথা নেই তাদের।
এদিকে, ক্রেতাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টার কথা জানিয়েছেন বিক্রেতারা। অপরদিকে রোজার প্রথম দিকে ইফতার সামগ্রীর মান ভালো থাকলেও পরের দিকে খারাপ হয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই প্রশাসনকে তদারকির অনুরোধ জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। ইফতারির বাজার কঠোর নজরদারীর কথা জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
রমজানের প্রথম দিন পুরো বরিশাল নগরীতেই ছিল ইফতারির বাজার। প্রধান প্রধান সড়ক, এমনকি শাখা এবং অলিগলি সড়কেও বসেছিল বাহারী ইফতারির পসরা। শাখা কিংবা অলিগলির দোকানে সেই পুরনো, ছোলা বুট, পিয়াজো, চপ, বেগুনিসহ ছিলো নানা আয়োজন।
তবে সামর্থবানরা ছুটেছেন অভিজাত, নামি-দামী ইফতারির বাজারে। বাজারে পাওয়া ইফতারির গুণে-মানে-দামে সন্তুষ্ট ক্রেতারা। ইফতার নিয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ নেই তাদের। নামি-দামী ব্র্যান্ডের ইফতারিতে আস্থা ক্রেতাদের। তবে প্রথম এবং আজ বুধবার দ্বিতীয় দিন অভিজাত প্রতিষ্ঠানের ইফতার নিমিষেই শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই পছন্দের ইফতারি কিনতে না পেরে নিরাশ হয়ে ফিরে যান।
বরিশালের ঐতিহ্যবাহী নাজেমস্এ-র পরিচালক রাকিবুর রহমান জানান, তারা ক্রেতাদের মানসম্মত নতুন নতুন ইফতার সামগ্রী উপহার দিতে চান। গরুর কালোভুনা, হালিম, ফিরনি, জর্দা, মুরগী মাসাল্লাম, আস্তো খাশীর রানসহ নতুন অনেক ইফতার সামগ্রীর সমাহার ঘটানোর কথা বলেন তিনি।
বাজারে গরুর মাংসের দাম না বাড়লেও নাজেমস্ ইফতারিতে গরুর কালোভুনা প্রতি কেজিতে ১শ’ টাকা বেড়েছে। এভাবে প্রতিটি ইফতারি পণ্যের দাম বাড়লেও এ নিয়ে ক্রেতাদের তেমন মাথা ব্যাথা নেই। তারা শুধু ইফতারির গুণগত মান নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, ফুটপাথের দোকানগুলোতে পুরনো ছোলা বুট, পিয়াজো, চপ, বেগুনি ছাড়াও সমাহার ঘটেছে নতুন নতুন ইফতার সামগ্রীর।
নগরীর হেমায়েত উদ্দিন রোডের আল-জামিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের পরিচালক মো. শাহজাহান পালোয়ান জানান, পুরনো ইফতার সামগ্রীর সাথে এবার শাহী জিলাপী, রেশমী জিলাপীসহ বেশ কিছু ইফতারি সামগ্রীর সমাহার ঘটিয়েছেন। ক্রেতাদের নিত্য নতুন এবং মান সম্পন্ন ইফতার দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সব দোকানে না হলেও অভিজাত ইফতারির দোকানগুলোতে কেনো কারণ ছাড়াই বেড়েছে বিভিন্ন ইফতার সামগ্রীর দাম।
রমজানের প্রথম দিকে ফলের দোকানেও অতিরিক্ত ভিড় দেখা গেছে। হঠাৎ ক্রেতার চাপ বাড়ায় প্রতিটি ফলের দাম বেড়েছে কোনো কারণ ছাড়াই।
এদিকে, রোজার শুরুর দিকে ইফতার সামগ্রীর মান ভালো থাকলেও পরের দিকে মান খারাপ হয়ে যায়। তাই বরিশালের ইফতারির বাজার তদারকির দাবি জানিয়েছেন টিআইবি’র আদলে গঠিত জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সহ-সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদা।
গত মঙ্গলবার প্রথম দিন বরিশালের ইফতারির বাজারে প্রশাসনের কোনো তদারকি দেখা যায়নি। তবে বুধবার দ্বিতীয় দিন বরিশালের বাজারে জেলা প্রশাসনের দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
একটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জয়দেব চক্রবর্তী জানান, জনগণের জন্য সরকার। জনগণকে নিয়ে সরকার। জনগণের ভেজালমুক্ত ইফতার সামগ্রী নিশ্চিত করার পাশাপাশি এবং মূল্য সহনীয় রাখতে জেলা প্রশাসন কাজ করছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জয়দেব চক্রবর্তী।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম