করোনোভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় স্বল্পমূল্যে জনগণের কাছে নিত্য পণ্য পৌঁছে দিতে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বরিশালেও ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
তবে জনসাধারণের প্রধান চাহিদা চাল হলেও টিসিবি চাল বিক্রি করছে না। যেসব পণ্য দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আবার ৭ লাখ নগরবাসীর জন্য মাত্র ১০ জন ডিলার হওয়ায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে হচ্ছে জনসাধারণের। তারা চালসহ অন্যান্য নিত্য পণ্যেরর পর্যাপ্ত সরবরাহসহ ডিলার সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। মসুর ডালের সরবরাহ কম বলে জানিয়েছেন ডিলাররা।
অপরদিকে পর্যাপ্ত পণ্যের মজুদ রয়েছে জানিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।
সারাদেশে বিভিন্ন ক্রান্তিকালে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করে টিসিবি। করোনার প্রভাব এবং আসন্ন রমজান উপলক্ষে সবশেষ গত পহেলা এপ্রিল থেকে বরিশালে ন্যায্য মূল্যে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল এবং ছোলা বুট বিক্রি শুরু করে তারা।
কিন্তু জনগণের প্রধান চাহিদা চাল হলেও চাল বিক্রি করছে না টিসিবি। যে সব পণ্য বিক্রি করছে তাও অপ্রতুল। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাচ্ছেন না ক্রেতারা। আবার বিতরণেও আছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। এছাড়া ডিলার কম হওয়ায় সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে হচ্ছে তাদের। এতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তারা চাল বিক্রিসহ সকল পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং ভোগান্তি কমাতে ডিলার সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
বরিশাল টিসিবির ডিলার নগরীর জিলা স্কুল মোড়ের দায়িত্বরত মেসার্স হাসান ব্রাদার্সসের এনামুল হক কবির বলেন, টিসিবি থেকে তাদের চাল দেয়া হচ্ছে না। চিনি, সয়াবিন, ছোলা এবং মসুর ডালসহ ৪টি পণ্য দেয়া হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত মসুর ডাল দেয়া হচ্ছে না।
বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, টিসিবি পন্যের সংকট নেই। প্রচুর পণ্য মজুদ রয়েছে। রমজানকে কেন্দ্রে করে পণ্য সরবরাহ এবং ডিলার সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, শুধুমাত্র শারীরিক দূরত্ব অনসুরণ না করায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১০ টাকা কেজি দরের (ওএমএস) চাল বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। শারীরিক দূরত্ব অনুসরণ না করলে টিসিবি পণ্য বিক্রিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। খাদ্যের চেয়ে জীবন বড়। তাই সকলকে শারীরিক দূরত্ব অনুসরণ করার আহ্বান জানান তিনি।
বরিশাল নগরীর ১০টি পয়েন্টসহ বিভাগের ৬ জেলায় মোট ৩৪টি পয়েন্টে ট্রাকে বিক্রি হচ্ছে টিসিবির ন্যায্য মূল্যের পণ্য।
একজন ক্রেতা ৫০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ ৩ কেজি চিনি, ৫০ টাকা দরে সর্বোচ্চ ১ কেজি মসুর ডাল, ৮০ টাকা লিটার দরে সর্বোচ্চ ৫ লিটার সয়াবিন এবং সর্বোচ্চ ২ কেজি ছোলা বুট কিনতে পারবেন ৬০ টাকা কেজি দরে। রমজানের আগ মুহূর্তে খেজুরও সরবরাহ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন টিসিবির বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন