২৪ জুন, ২০২১ ১৬:৪৭

গৌরনদীতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আরও একজন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

গৌরনদীতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আরও একজন নিহত

নিহত মো. শাহ আলম খান।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য পদে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আরও একজন নিহত হয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় হামলার পর আহত অবস্থায় বরিশাল শেরই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতেই মারা যান তিনি।

এ নিয়ে ওই ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনদিনে তিনজন নিহত হলো। এ ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. শাহ আলম খান (৬০)। তিনি পার্শ্ববর্তী বার্থী ইউনিয়নের বড় দুলালী গ্রামের বাসিন্দা। শাহ আলম খাঞ্জাপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য পদে পরাজিত মন্টু হাওলাদারের ভায়রা ভাই। তার ২ ছেলে এবং ২ মেয়ে রয়েছে। অরাজনৈতিক শাহ আলম কৃষ এবং সাংসারিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী সদস্য ফিরোজ মৃধাকে দায়ী করেছেন শাহ আলমের স্বজনরা। তারা এই হত্যাকাণ্ডের কঠোর বিচার দাবি করেন।

নিহতের ভাতিজা অপূর্ব খান জানান, খাঞ্জাপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য পদে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মন্টুর ভায়রা শাহ আলমকে বুধবার সকালে হুমকি দেয় ফিরোজের সমর্থকরা। ওইদিন সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাঞ্জাপুরের বেইলি ব্রিজ এলাকায় আকস্মিক শাহ আলমের ওপর হামলা চালায় তারা। এসময় তাদের কিল-ঘুষিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং রাত সাড়ে ৯টায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাতেই মারা যান তিনি।

নিহতের ছোট ভাই মজিবর খান জানান, তার ভাই শাহ আলম কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন তিনি। শুধুমাত্র নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধের জের ধরে তার ভাইকে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। তিনি তার ভাইকে হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা লিপি বেগম ও জেসমিন আক্তার জানান, ইউপি সদস্য পদে নির্বাচনকে কেন্দ্র ৩ দিনের ব্যবধানে ওই এলাকায় তিনজন নিহত হয়েছে। এ কারণে ওই এলাকায় আতঙ্ক এবং ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুলিশের গ্রেফতারের ভয়ে কমলাপুর এবং বড়দুলালী গ্রাম অনেকটা পুরুষ শূন্য হয়ে গেছে।

এদিকে, ৩ দিনের ব্যবধানে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ফের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রোধে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বরিশাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার কথা বলেন নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম।

গৌরনদী থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন জানান, শাহ আলমকে নির্বাচনের কারণে হত্যা করা হয়নি। ভ্যানে ওঠাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।

এর আগে, গত ২১ জুন নির্বাচন চলাকালে খাঞ্জাপুরের কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ককটেল হামলায় মৌজে আলী মৃধা (৫৫) এবং ওইদিন সন্ধ্যায় এক সদস্য প্রার্থীর বিজয় মিছিলে ককটেল হামলায় আবু বক্কর (২৭) নামে আরও এক ব্যক্তি নিহত হয়।

মৌজে আলী মৃধা হত্যা মামলায় খাঞ্জাপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী সদস্য প্রার্থী ফিরোজ মৃধাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। কিন্তু আবু বক্কর এবং শাহ আলম হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর