ভারতে নারী পাচারকাণ্ডের হোতা রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’র সহযোগী ও মগবাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসী অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
আজ সোমবার বিকালে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে যে, এই পাঁচজন লকডাউনে বিভিন্ন বাসায় ইয়াবা সরবরাহ করতেন। সেইসঙ্গে হাতিরঝিলে পথচারীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা হিরো অনিক কঠোর লকডাউনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক সরবরাহ করতেন। হাতিরঝিলে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও টিকটক ভিডিও বানাতে আসা তরুণদের হয়রানি করে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি করতেন। তিনি ও তার সহযোগীরা মগবাজার, মধুবাগ, পিরেরবাগ, নতুন রাস্তা, পেয়ারাবাগ, চেয়ারম্যান গলি, আমবাগান ও হাতিরঝিল এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন।’
হিরো অনিকের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক চোরাচালান, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ ৯টি মামলা চলমান।
টিকটক হৃদয়ের সঙ্গে অনিকের দীর্ঘদিনের সখ্যতার বিষয়ে র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনিক বলেছেন, তিনি হৃদয়কে নিয়মিত মাদক সরবরাহ করতেন। তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেও সহযোগিতা করেছেন।’
চলতি বছরের জুনে ভারতের বেঙ্গালুরুতে সম্প্রতি বাংলাদেশের এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। শারীরিক নির্যাতনের সময় ২২ বছরের ওই তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় বেঙ্গালুরু পুলিশ অনিকসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে। তাকে গ্রেফতারের পর আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী নানা চক্রের বিষয়ে নানা তথ্য পেতে শুরু করে পুলিশ। তদন্তে বেরিয়ে আসে মাদক চোরাচালানের বিভিন্ন তথ্য।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘কিশোর বয়স থেকেই অনিক নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময়ে তিনি গ্রেফতার হলেও বের হয়ে এসে আবার অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৬ সালে আলোচিত আরিফ হত্যাকাণ্ডের পর তার উত্থান হয়।’
হিরো অনিকের ২০- ২৫ জন সহযোগী রয়েছে। তাদের মধ্যে শহীদুল ইসলাম, আরিফ, সোহাগ, হিরাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
খন্দকার আল মঈন জানান, শহীদুলের বিরুদ্ধে মাদক, ডাকাতিসহ ৬টি, আরিফের বিরুদ্ধে ২টি, সোহাগের বিরুদ্ধে ৩টি ও হিরার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টাসহ ২টি মামলা চলমান।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে আমরা বেশ কয়েকটি মাদক সিন্ডিকেটের বিষয়ে তথ্য পেয়েছি। পরে আমরা অভিযান চালাব।’
এর আগে রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব-৩ এর একটি টিম। তাদের কাছ থেকে বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার অন্যরা হলেন মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে এ্যাম্পুল (৩৪), আবির আহমেদ রাকিব (২২), মো. সোহাগ হোসেন আরিফ (৩৬) এবং হিরা (২২)। গ্রেফতারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগজিন, ধারালো অস্ত্র পাঁচটি, চেইন একটি, ৩০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, সাতটি মোবাইল ফোন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ