দুপুরের পর থেকেই বাড়তে শুরু করেছে যানজট। বেলা যত বাড়ছে যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির সারিও ততই দীর্ঘ হচ্ছে। সাভারের দু’টি মহাসড়কে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার যানজট লেগে আছে। এছাড়া একটি সড়কে ২১ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের জটলা লেগে আছে। এ যানজট ও রোদের উত্তাপের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। সেই সঙ্গে কোরবানির পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন পাইকাররা।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ত্রিমোড়ে তীব্র যানজটের চিত্র দেখা গেছে। জানা গেছে, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে নবীনগর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার যানজট, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর থেকে হেমায়েতপুর পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার যানজট। এছাড়া টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জামগড়া থেকে ধৌড় পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার সড়কের ভিন্ন স্থানে যানবাহনের জটলা লেগে আছে, থেমে থেমে চলছে পরিবহন। এসব মহাসড়কে হাজার হাজার যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছে।
সাভার ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ আব্দুস সালাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চন্দ্রা থেকে হেমায়েতপুর পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করে এখন কিছুটা কমাতে পেরেছি। আমাদের ট্রাফিক পুলিশের সব সদস্যের ছুটি বাতিল করা হয়েছে ও নতুন করে আরও ফোর্স যুক্ত করা হয়েছে। যানজটের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, একদিকে ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছেন জনগণ, এজন্য অতিরিক্ত গাড়ির চাপ ও ঘরমুখো মানুষের ভিড়। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে কোরবানির পশু হাটে তুলতে ঢাকায় আসছে গরুবাহী গাড়ি। এজন্য উভয় দিকেই গাড়ির চাপ অনেক বেশি।
তিনি বলেন, এছাড়া দুই-একদিনের মধ্যে পোশাক কারখানা ছুটি হবে। তখন ভিড় বেশি হবে, তাই আগেই সাধারণ মানুষ বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। যত বেলা বাড়ছে যানজট ততই বেড়ে যাচ্ছে। তবে আমরা সড়কে রয়েছি, সড়কে যানজট নিরসনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই যানজটে চরম দুর্ভোগে পড়ছে গাড়িচালক ও বাসযাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। দুপুরের পর তৈরি পোশাক কারখানার ছুটি শুরু হওয়ায় এই যানজট। এই তীব্র গরম ও রাস্তায় যানজট সবমিলিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরছেন মমেনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘ছেলে ও মেয়ে নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছি, রাস্তায় তীব্র যানজট- নবীনগর থেকে বাইপাইলে আসতে ২ ঘণ্টা সময় লেগেছে। রংপুর যাওয়ার জন্য কোন বাসের টিকিট নেই তাই গরুর ট্রাকে সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছি।’
গার্মেন্টস কর্মী মেহেদী হাসান সুজন বলেন, ‘সব কারখানায় দুপুরের পর থেকে ছুটি হওয়ায় রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় যাবো। রাস্তায় এতো যানজট থাকলে পরিবার নিয়ে কীভাবে বাড়ি যাবো? বাড়ি যেতে অনেক কষ্ট করতে হবে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের গেন্ডা থেকে থানা বাসস্ট্যান্ড ও আশুলিয়ার বাইপাইল আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কের বাইপাইল থেকে জামগড়া ও জিরাবো এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কে একাধিক ট্রাফিক পুলিশ কাজ করলেও যানজট নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না কোন ভাবেই। যার ফলে তীব্র যানজটে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়ছে মহাসড়ক ব্যবহারকারী মানুষজন।’
ট্রাফিক পুলিশ বলছে, মহাসড়কে উন্নয়নমূলক কাজ ও যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে যাত্রী উঠা-নামা করাই এই যানজট সৃষ্টির মূল কারণ। এ বিষয়ে ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে যাচ্ছেন।’
বিডি-প্রতিদিন/শফিক