ঢাকা সফররত রাশিয়ার সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক ও ব্লগার মি. জর্জি জ্যোতভ বাংলাদেশের পর্যটন খাতে ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার পর্যটন প্রেমিদের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে। যেহেতু বর্তমানে রাশিয়ার নাগরিকদের ইউরোপ ভ্রমণে বিধি নিষেধ রয়েছে, তাই এশিয়ার মধ্যে বাংলদেশ হতে পারে রাশিয়ানদের জন্য পর্যটনের অন্যতম স্থান।
রবিবার দুপুরে ঢাকার সেগুনবাগিচায় সেগুন রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ সম্ভাবনার কথা বলেন। অনুষ্ঠানে রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকার পরিচালক মি. মাক্সিম দোবরোখোতরভ এবং সিআইএস বিসিআইসির কো চেয়ারম্যান ও গ্লোবাল এক্সপ্লোর লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচ এম সাঈফ আলী খান উপস্থিত ছিলেন। এসময় বাংলাদেশ ভ্রমণে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন মি. জর্জি জ্যোতভ।
রুশ সাংবাদিক বলেন, কক্সবাজার বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত। আমার মনে হয় সেখানে উন্নয়নের অনেক সুযোগ এখনো রয়েছে। বিশেষ করে সৈকতের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিয়ে নজর দেয়া যেতে পারে। তাছাড়া যদি সরাসরি বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার বিমান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়- তাহলে এই পর্যটন ক্ষেত্র বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, রাশিয়ার সাথে সরাসরি বাংলাদেশ বিমান চলাচলের ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পর্যটন খাতের পরিচিতি না থাকাটাও সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রাশিয়ার অনেক পর্যটকই জানেন না যে, বাংলাদেশে এত সুন্দর ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত অনেক স্থান রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত করার জন্য বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরো বেশি বেশি তুলে ধরতে হবে। এরফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে নতুন নতুন বিনিয়োগও আসবে। মানুষের কর্মসংস্থান বেড়ে যাবে। দুই দেশের মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার হবে।
জর্জি জ্যোতভ এক সপ্তাহের ভ্রমণে বাংলাদেশের সুন্দরবন, কক্সবাজার এবং দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্নস্থান পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, বিশ্বের ৯৭টি দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের মতো এমন বন্ধুপ্রতিম দেশ কোথাও পাননি। বাংলাদেশের জনগণের আন্তরিকতার ব্যাপক প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দরিদ্র হলেও তারা খুবই বন্ধু সুলভ। বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের খাদ্যের দামও কম। তাছাড়া এখানে নিরাপত্তাও অনেক ভালো।
তিনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যের প্রশংসা করে বলেন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা থেকেও ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ জায়গা। বিশেষ করে সুন্দরবনের সৌন্দর্য বর্ণনা করার মতো নয়। অন্যান্য দেশের বনগুলো অনেকটা কৃত্রিম। সেই দেশগুলো অনেকটা চিড়িখানার মতো। কিন্তু সুন্দরবন পরিপূর্ণ প্রাকৃতিক অনুভূতি পাওয়া যায়। যা অনেকটা আমাজন বনের মতো।
এসময় তিনি বাংলাদেশের পর্যটন খাতের সমস্যাগুলো নিয়েও কথা বলেন। রাশিয়ায় ফিরে গিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য কাজ করবেন বলে জানান তিনি। আগামীতে তার পরিবারসহ এক মাসের জন্য বাংলাদেশে ভ্রমণ করবেন বলে জানান জর্জি জ্যোতভ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল