প্রাচীনকালে গ্রাম-সংসদ অথবা পঞ্চায়েত রাজা কর্তৃক মনোনীত বা কোনো গ্রামের জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হতো। গ্রাম প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় পঞ্চায়েতগুলিতে সকল শ্রেণি ও বর্ণের লোকদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। কালের পরিক্রমায় এখনও কিছু পঞ্চায়েত বা সেই সব সামাজিক ব্যবস্থা বিদ্যমান। যদিও আগের মতো সেইসব কার্যক্রম এখন আর তাদের মাধ্যমে হয় না। গ্রাম্য পটভূমিতে এখনো পঞ্চায়েতের স্রোতধারা মোটামুটি বহমান।
রাজধানীতে এখনও কয়েকটি পঞ্চায়েত ব্যবস্থা টিকে রয়েছে, যেগুলোর বয়স প্রায় ৪-৫ যুগের বেশি। বিশেষ করে রাজধানীর লালবাগ, বংশাল, কলতাবাজার, গেন্ডারিয়া এবং যাত্রাবাড়িতে এখনও কয়েকটি পঞ্চায়েত সিস্টেম বা পদ্ধতি রয়েছে। এমনই একটি পঞ্চায়েত রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ির আদর্শ পঞ্চায়েত। বৃহত্তর যাত্রাবাড়িতে মোট ৫টি পঞ্চায়েত রয়েছে এর মধ্যে এই আদর্শ পঞ্চায়েত একটি। সবচেয়ে আলোচিত যে উদ্যোগটি গত কয়েক যুগ ধরে তারা চলমান রেখেছে তা হলো পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কোরবানির মাংস বণ্টন।
বর্তমানে এই পঞ্চায়েতের সদস্য বা ‘ঘর’ সংখ্যা হল প্রায় ২৫০। আজ এদের মধ্যে ৫৫টি পরিবার কোরবানি দিয়েছেন। আর বাকি ১৯৫ পরিবার কোনো না কোনো কারণে কোরবানি দিতে পারেনি। ঈদের আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে তাই তাদেরকেও পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সমবণ্টন করে কোরবানির মাংস দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাজী মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, ‘আজ এ পঞ্চায়েতের ৫২টি পরিবার পশু কোরবানি দিয়েছে (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত)। তারা তাদের জবাইকৃত পশুর অর্ধেক পঞ্চায়েতের মাঠে দিয়ে গেছেন। এছাড়া জবাইকৃত পশুর চামড়াও পঞ্চায়েতে জমা দিয়েছেন। মাংস জমা হওয়ার পর নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে তা কেটে ভাগ করা হচ্ছে।’
আরেক সর্দার হাফেজ তাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আজ পঞ্চায়েতে মাংস দিয়েছে ৫২টি পরিবার। কিন্তু ভাগ হচ্ছে পঞ্চায়েতের ২৫০টি পরিবারের মধ্যে। অর্থাৎ এ পঞ্চায়েতের বা সমাজের যিনি কোরবানি দিয়েছেন তিনিও মাংস পান এবং যিনি কোরবানি দেননি তিনিও মাংস পান। এখান থেকে আরেকটি বড় ভাগ দেয়া হচ্ছে গরীবদের মাঝে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল