১৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ১২:৩৫
ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, বাড়ছে মশা

বর্জ্যের নগর চট্টগ্রাম

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

বর্জ্যের নগর চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের কেবি আমান আলী রোডের টিচার্স ট্রেনিং কলেজ গেটের সামনেই পড়ে আছে বর্জ্য -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম নগরের কেবি আমান আলী রোডের অনতিদূরে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি)। এ কলেজের গেটে নামফলকের সামনেই পড়ে আছে বর্জ্য। এখানে নেই কোনো ডাস্টবিন। কিন্তু প্রতিনিয়তই এখানে ফেলা হচ্ছে নানা বর্জ্য। একইভাবে বায়েজিদ এলাকার শেরশাহ হাউজিং মোড়সহ নগরের যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আবর্জনা। 

এভাবে কেবল টিটিসি ক্যাম্পাসের সামনে কিংবা শেরশাহ হাউজিং এলাকার মোড় নয়, নগরের বিভিন্ন এলাকা, মোড়, জংশন, কাঁচা বাজার, সড়কের পাশে এবং ফুটপাথসহ যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে আবর্জনা। কোথাও উপচে পড়ছে ডাস্টবিন, কোথাও ডাস্টবিন ছাড়াই সড়ক-ফুটপাথে পড়ে থাকে বর্জ্য। এসব আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এসব নালায় প্রজনন হচ্ছে মশার। আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে টিটিসির সামনে, শেরশাহ হাউজিংয়ের মোড়, আলমাস সিনেমার মোড়, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের সামনেসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সড়ক ও ফুটপাথসহ নানা স্থানে বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায়। চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন গত কয়েক দিন নগরের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে যত্রতত্র আবর্জনা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

নগরবাসীর অভিযোগ, নগরের অনেক এলাকা থেকে নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার ও রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া হয় না। অনেক এলাকায় দিনের পর দিন ময়লা থেকেই যাচ্ছে। তাছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওয়ার্ডভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকলেও তারা নিয়ম মাফিক কাজ করে না বলে অভিযোগও দীর্ঘদিনের। ফলে নগরের বিভিন্ন এলাকা, নালা-নর্দমা এবং ড্রেনগুলো নানা বর্জ্যে ঠাসা থাকে।

চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘আমি পরিষ্কার ঘোষণা দিয়েছি, নগরের কোথাও কোনো ময়লা পড়ে থাকতে দেখা গেলে পরিচ্ছন্ন বিভাগের সুপারভাইজারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই নগরীর সব রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে হবে। যারা এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন তাদের পুরস্কৃত ও যারা করবেন না তাদের তিরস্কারের পাশাপাশি শাস্তিও দেওয়া হবে। কোথাও কোনো আবর্জনা দেখতে চাই না।’ 

চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নগরের ৪১ ওয়ার্ডে দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। চসিকে প্রতিটি ওয়ার্ডের নালা-নর্দমা ও ড্রেন পরিষ্কারের জন্য ১ হাজার ৬৬৯ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছে। এর মধ্যে স্থায়ী ৭৬৩ জন এবং অস্থায়ী ৯০৬ জন। তাছাড়া গত তিন বছর আগে ‘ডোর টু ডোর’ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এ প্রকল্পের জন্য নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয় আরও ১ হাজার ৯৭৮ জন। সব মিলে বর্তমানে ৩ হাজার ৬৪৭ জন  পরিচ্ছন্নতাকর্মী বর্জ্য অপসারণ কাজে নিয়োজিত আছেন। 

এ হিসাবে প্রতি ওয়ার্ডে কর্মরত আছেন ৮৯ জন। তাছাড়া এসব কর্মীর তদারকি করার জন্য নিয়োজিত আছেন ৯২ জন সুপারভাইজার। নিয়ম মতে, এসব কর্মীর প্রতিটি ওয়ার্ডের নালা-নর্দমা এবং ড্রেন পরিষ্কার করার কথা।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর