শনিবার, ৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভাড়াটিয়ার তথ্য প্রদানে ধীরগতি

পাঁচ মাসে সংগ্রহ মাত্র ৩০ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্ঘটনা বা বিপদে নাগরিকদের স্বজনদের শনাক্ত করে সহায়তা দেওয়া, কোনো নাগরিকের পারিপার্শ্বিক নিরাপত্তা এবং সন্দেহভাজনদের গতিবিধি শনাক্ত করার জন্যও ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে সচেতনতার অভাবে এখনো অনেক ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম পূরণ করেননি। তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন এবং পরে দুই দফায় সময় বাড়ানো হলেও এ কাজে গতি আসেনি।

গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ১৮ লাখ ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মে মাসের শেষ ভাগে আরও কী পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ হয়েছে, সে ব্যাপারে ডিএমপির কাছ থেকে নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২৯ মে পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ ভাড়াটিয়ার তথ্য ফরম হাতে পেয়েছে  পুলিশ, যা মোট ভাড়াটিয়ার অর্ধেকেরও কম। প্রাপ্ত তথ্য দিয়ে একটি যুগোপযোগী ডাটাবেইস তৈরি করবে  পুলিশ। এজন্য একটি সফটওয়্যারও তৈরি করেছে ডিএমপি। তবে সেই তথ্য লিপিবদ্ধকরণ কাজ এখনো শুরুই হয়নি।

রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি থেকে  এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত তথ্য ফরম পূরণে তোড়জোড়  দেখা গেলেও এরপর তা ঝিমিয়ে পড়েছে। বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য ফরম জমা দিতেও আর বলা হচ্ছে না। কিছু এলাকায় ফরম গ্রহণ করে জমা দেননি বাড়িওয়ালারা। অনেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ‘নিয়ম রক্ষার’ ফরম পূরণ  করে  জমা  দিয়েছেন। ফরমে সঠিক তথ্য ছিল কিনা এবং ফরম পূরণ হয়েছে কিনা, তা যাচাই হয়নি অনেক এলাকায়ই।

অবশ্য দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক এলাকায়ই ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। কিছু স্থানে কাজ শেষ পর্যায়ে। এবার বাদ পড়াদের শনাক্ত করে ফরম পূরণের পাশাপাশি তথ্য যাচাই করা হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এটি চলমান প্রক্রিয়া। জনগণের নিরাপত্তা ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কার্যক্রমে ভালো অগ্রগতি আছে। এখনো যেসব নগরবাসী ফরম পূরণ করেননি, তাদের ফরম পূরণের জন্য আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। আর বাদ পড়াদের অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে কিনা, তাও যাচাই করে দেখা হবে।’ তবে এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ ফরম পূরণ হয়েছে, তা জানাতে পারেননি তিনি।

রাজধানীতে জঙ্গিসহ অপরাধী শনাক্তের কাজ সহজ করতে গত জানুয়ারিতে পুলিশ বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে। তথ্য ফরম জমা দেওয়ার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে এর আগে ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়।

ডিএমপির এক কর্মকর্তা বলেন, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখ বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এরপর আর কোনো ডেডলাইন দেয়নি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ফলে কার্যকমে ধীরগতি চলে আসে। ডাটাবেইস তৈরির কাজেও হাত দেওয়া হয়নি। ২৯ মে পর্যন্ত ৩০ লাখেরও কম তথ্য ফরম সংগ্রহ করেছে রাজধানীর ৪৯টি থানার পুলিশ।

সর্বশেষ খবর