নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকরা। ক্যাম্পাসেই তারা উত্ত্যক্ত এবং অশালীন আচরণের শিকার হচ্ছেন। কখনো কর্মকর্তা, আবার কখনো ছাত্রলীগ নেতারা তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, গত আটদিনের ব্যবধানে তিন নারী শিক্ষক উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন। এরপর ওই নারী শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে নিরাপদ বোধ করছেন না। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ কে এম নূর-উন-নবীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শিক্ষকদের অপমান কাম্য নয়। ভর্তি পরীক্ষার সময় দুটি ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকালে ক্যাম্পাসেই ছাত্রলীগের তিন নেতার উত্ত্যক্তের শিকার হন ইংরেজী বিভাগ এবং উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের দুই নারী প্রভাষক।
তারা দুজনই শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সহকারী প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হলে যাওয়ার পথে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-সাহিত্য সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক আদনান আলী ও সদস্য জয় উত্ত্যক্তসহ তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। পরে উত্ত্যক্তকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে শিককরা প্রক্টর বরাবর অভিযোগও করেন। এ ব্যাপারে সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুর রহমান জানান, উত্ত্যক্তের শিকার নারী শিক্ষকরা লিখিত অভিযোগ করে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন। অন্যদিকে উত্ত্যক্তকারী তিন শিক্ষার্থীও ঘটনার জন্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেছে। বিষয়টি উপাচার্যকে অবহিত করা হবে। কারণ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার উপাচার্যের।
জানা গেছে, উত্ত্যক্তের ঘটনায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট বডি তীব্র নিন্দা জানিয়ে গতকাল বিকেলে জরুরি সভা করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নারী শিক্ষকদের নিরাপত্তা প্রদানের দাবি করেছে। সভার সভাপতি ও ওই হলের প্রভোস্ট ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার (আজ) উপাচার্যকে লিখিতভাবে জানানো হবে। উপাচার্য ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী কর্মসূচি নেওয়া হবে।এ ছাড়া গত ১৬ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষ সম্মান শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক নারী শিক্ষকের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান। এ ঘটনার প্রতিবাদে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ২০ নভেম্বর প্রতিবাদ সভা করে জড়িত কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেন। অবশ্য অশালীন আচরণের অভিযোগে ঘটনার দিনই জড়িত কর্মকর্তাকে ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমান বলেন, এসব ঘটনা দুঃখজনক এবং সুখকর নয়।