কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ১৭ মাস পূর্ণ হয়েছে ২০ আগস্ট। একাধিকবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও দীর্ঘ এই সময়ে মামলার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে মিডিয়ায় মুখ খুলতেও নারাজ সিআইডি। দীর্ঘ সময়েও তনুর ঘাতকরা চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার। সূত্র জানায়, গত বছরের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভিতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর ফেরেননি কলেজছাত্রী তনু।
পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভিতর একটি নির্জন জঙ্গলে তনুর লাশের সন্ধান পান। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর গত বছরের ১ এপ্রিল মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় কুমিল্লা সিআইডি। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ না করে প্রতিবেদন দেওয়ায় ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন নিয়ে শুরুতেই সংশয় দেখা দেয়। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজনের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা— এ নিয়েও সিআইডি মুখ খুলছে না। তাই দীর্ঘ ১৭ মাসেও তনু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত বা গ্রেফতার করতে না পারা, সামরিক-বেসামরিক অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা, এমনকি ডিএনএ পরীক্ষায় তিনজনের শুক্রাণু পেলেও এ পর্যন্ত ডিএনএ ম্যাচ করে ঘাতকদের শনাক্ত করতে না পারায় মেয়ে হত্যার বিচার পাওয়া নিয়ে তনুর পরিবারসহ সচেতন মহলে সংশয় দেখা দিয়েছে।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম জানান, মেয়ের শোকে তনুর বাবা স্ট্রোক করে এখন কোনোমতে বেঁচে আছেন, হয়তো মেয়ে হত্যার বিচার না দেখেই তাকে মরতে হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডি, কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদের সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি রিসিভ না করায় তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি।