রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আমাদের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে

—— বি. চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, আমরা ইতিমধ্যেই একদলীয় শাসন দেখেছি, গণতন্ত্রের নামে দলীয় শাসন দেখেছি এবং স্বৈরশাসন দেখেছি ও দেখছি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে জনগণের শাসন এখনো দেখিনি। এই স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত হয়ে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারের বিরুদ্ধে। যারা গণতন্ত্র চান, সুন্দর বাংলাদেশ এবং স্বৈরশাসনমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চান আমরা তাদের পক্ষে আছি। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি এই ঐক্যের মাধ্যমেই জনগণের বিজয় অর্জিত হবে। গতকাল সন্ধ্যার পর রাজধানীর গুলশানে অল কমিউনিটি ক্লাবে অনুষ্ঠিত প্রজন্ম বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠনের ‘প্ল্যান-বি পজিটিভ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় যুক্তফ্রন্ট নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব এবং প্রজন্ম বাংলাদেশের প্রধান মাহী বি. চৌধুরীও কথা বলেন। এর আগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক বি. চৌধুরী। প্রজন্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক মাহী বি. চৌধুরীর পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন— জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর অব. আবদুল মান্নান, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন। আলোচনা শেষে উপস্থিত সুধীজনদের কাছ থেকে প্রশ্ন গ্রহণ করেন মাহী বি. চৌধুরী। এ সময় ব্যারিস্টার ওমর ফারুকসহ আরও কয়েকজন প্রশ্ন রাখেন।

বি. চৌধুরী বলেন, আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছি। এই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন। যারা দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী তাদের সঙ্গেই আমরা আছি। আপনারা জানেন যে, দেশের আজ কী অবস্থা চলছে। আইনের শাসন নেই, বিচার নেই। মানুষের মৌলিক অধিকার নেই। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সব গণমাধ্যম পর্যন্ত আজ সরকার নিয়ন্ত্রিত। এসব থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের ভারসাম্য রাজনীতির প্রয়োজন। যেমন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে। জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দল থেকে স্পিকার নির্বাচিত হলে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হতে হবে বিরোধী দল থেকে। এভাবেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও দেশের রাজনীতিতে ভারসাম্য আনতে হবে। সাবেক এই রাষ্ট্রপতি জাতীয় ঐক্যের সাফল্য নিয়ে গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জনগণ একত্রিত হলে অসম্ভবের কিছুই নেই। আমরা আশা করি— খুব শিগগিরই সেই জনঐক্যের মাধ্যমে স্বৈরশাহী বিদায় নেবে।

যুক্তফ্রন্ট আহ্বায়ক আরও বলেন, আমরা সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই। যেখানে সন্ত্রাস শব্দটির স্থলে শান্তি শব্দটি প্রতিস্থাপিত হয়। দুর্নীতি হবে ইতিহাসের অংশ। দারিদ্র্য প্রতিস্থাপিত হবে প্রাচুর্যে। ভোটাধিকার একটি নিত্য নৈমিত্তিক স্বাভাবিক অধিকারে পরিণত হবে। মানুষ হাসতে হাসতে ভোট দিতে যাবে। এর সবই সম্ভব গণতন্ত্র এবং উন্নয়ন অবিচ্ছেদ্যভাবে হাতে হাত ধরে চলবে।

আ স ম আবদুর রব বলেন, আমাদের আন্দোলন ক্ষমতাসীন সরকার ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে। এর বাইরে যুক্তফ্রন্ট যে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছে— যারাই এসব প্রস্তাব মেনে নিয়ে এগিয়ে আসবেন তাদেরকেই আমরা স্বাগত জানাব। তিনি বলেন, দেশের এই অর্বাচীন সরকার মানুষের ভোটাধিকারসহ সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ন্যায় বিচার নেই। মৌলিক অধিকার নেই। এসব অধিকারসহ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের আজকের আন্দোলন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশের চরম সংকটকালেও এই তরুণদের দেখে আজ আমরা শতভাগ আশাবাদী। কিছুদিন আগেও আমরা এই তরুণ যুবকদের অথর্ব ও স্বার্থপর ভেবেছিলাম। কারণ দেশ ও দেশের রাজনীতি নিয়ে এদের কোনো মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু সেই তরুণ-যুবক ও শিশু-কিশোররা এবার কোটা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মাধ্যমে যা দেখিয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

সর্বশেষ খবর