শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঐক্য পরিষদের সভায়ও মালিক শ্রমিকদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে ঘন ঘন দুর্ঘটনায় যাত্রী-পথচারী নিহতের বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভায়ও ক্ষোভ জানিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তারা দুর্ঘটনার কারণ ও বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরে বক্তব্য দেন। তারা অভিযোগ করেন, কন্ট্রাক্ট সিস্টেমে রাস্তায় গাড়ি নামানো, অনভিজ্ঞ চালক দিয়ে গাড়ি চালানো, অসাধু পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও মাদকাসক্ত চালকের কারণে অকালে সড়কে ঝরছে অনেক প্রাণ। গতকাল গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির আহমেদ মিলনায়তনে এ সভা আয়োজন করা হয়। সভায় কন্ট্রাক্ট সিস্টেমে গাড়ি না চালাতে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। মালিক সমিতির পক্ষে পৃথক টিম সরেজমিন কন্ট্রাক্ট সিস্টেমে চালানোর বিষয়ে তদন্ত করবে। এতে কারও বিরুদ্ধে কন্ট্রাক্টে চালানোর প্রমাণ পেলে ওই মালিকের গাড়ির নিবন্ধন বাতিল করতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছে চিঠি পাঠানো হবে। একই সঙ্গে দুর্ঘটনা কমাতে দুই মাস অন্তর চালকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ তার বক্তব্যে বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে সুপ্রভাতের দুটি বাস পাড়াপাড়ি করছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র আবরার তার বাবাসহ জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় তাদের দেখে একটি বাস ব্রেক করে আর অন্যটি চাপা দিয়ে চলে যায়। ঢাকার পরিবহনের অধিকাংশ চালকই নন-প্রফেশনাল। এখন থেকে ঢাকার পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে মাঠে নামবে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।’ মহাখালী বাস টার্মিনাল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু বলেন, ‘দুই দিন পরপর দুর্ঘটনা ঘটে। যেভাবেই হোক এ থেকে নিষ্কৃতি পেতে হবে।

রাস্তায় একশ্রেণির পুলিশ সিগন্যাল দেয় কাগজপত্র দেখার জন্য নয়, টাকা নেওয়ার জন্য। অথচ যারা ভিআইপি গাড়ি চালায় তাদের কাগজপত্রের কথা জিজ্ঞাসাও করে না। ৫০০ গাড়ির রুট পারমিট নিলে, আরও ৫০০ গাড়ির রুট পারমিট না নিয়ে ডুপ্লিকেট দিয়ে চালায়। আমরা দেখব চালকরা আইন মানে কিনা, তাদের আইন মানাতে হবে। মহাখালী থেকে শেরপুর যেতে ২ হাজার টাকা চাঁদা লাগে। এই বেপরোয়া চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।’

মালিক সমিতির নেতা ও নড়িয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম ইসমাইল হক বলেন, ‘চালকদের মাদক সেবন বন্ধ করা গেলে সড়কে দুর্ঘটনা কমবে।’ গুলিস্তানের শ্রমিকনেতা করম আলী বলেন, ‘ঢাকায় ৭ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলে না। তবু এত দুর্ঘটনা কেন? জেব্রা ক্রসিং পথচারীদের নিরাপদ স্থান। সেখানে কেন দুর্ঘটনা হলো তা তদন্ত করে বের করা উচিত।’ আরেক শ্রমিকনেতা মীর সেলিম বলেন, ‘আমরা ঘর ঠিক রাখতে পারছি না। এই পরিবহনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।’ সায়েদাবাদের শ্রমিকনেতা মোহাম্মদ আলী সুবা বলেন, ‘অনভিজ্ঞ চালকদের দিয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে।’ মহাখালীর শ্রমিকনেতা মো. মানিক বলেন, ‘এখানে রাস্তার তুলনায় বহু গাড়ি চলে। যে পরিমাণ রাস্তা থাকা দরকার তা নেই। স্টপেজে গাড়ি রাখার জায়গা নেই।’ শ্রমিকদের জন্য তিনি ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের দাবি করেন।

সর্বশেষ খবর