শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

উদ্বোধনেই সীমাবদ্ধ ট্রাফিক ডিজিটালাইজেশন

শুরু হয়নি ট্রাফিক ই-প্রসিকিউশনে জরিমানা আদায়

মাহবুব মমতাজী

উদ্বোধনেই সীমাবদ্ধ রয়েছে ট্রাফিকের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম। শুরু হয়নি ট্রাফিক ই-প্রসিকিউশনে জরিমানা আদায়। অথচ ঘটনাস্থলেই টাকা পরিশোধের পদ্ধতি চালুর কথা বলা হলেও এখনো চলছে আগের মতোই ইউক্যাশে টাকা জমা। এরপর জরিমানার স্লিপ হাতে নিয়ে গাড়ির ডকুমেন্ট সংগ্রহের জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের বিভাগীয় কার্যালয়ে। 

গত ৪ আগস্ট রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে ‘পথচারীর করণীয়’ শীর্ষক সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং ‘ক্যাশ কার্ডের মাধ্যমে ট্রাফিক প্রসিকিউশনের জরিমানা আদায়’ ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। 

তিনি বলেন, এখন থেকে যে কোনো কার্ড ব্যবহার করে ট্রাফিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করা যাবে। এতে হয়রানির পরিমাণ কমে যাবে। আর ট্রাফিক প্রসিকিউশনের জরিমানার টাকার জন্য চালক ও গাড়ির কাগজপত্র জব্দ করা হবে না। চালক তার জরিমানার টাকা এখন থেকে অন স্পটে যে কোনো ব্যাংকের ডেবিট, ক্রেডিট, ভিসা, ক্যাশ, বিকাশ, রকেট ও অন্যান্য কার্ড ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারবেন। অন স্পটে টাকা পরিশোধের ফলে চালক বা মালিক হয়রানি থেকে মুক্ত থাকবে। আগে এ টাকা আদায়কালে সীমাহীন অনিয়ম ছিল, দুর্নীতি হতো। দুই হাজার টাকা নেওয়া হলেও অল্প টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হতো। এখন তা আর হবে না। এতদিন ইউসিবিএলের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হতো। টাকা আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাগজপত্র আটকা থাকত। টাকা দিতে দেরি হলে আরও ভোগান্তি বাড়ত। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কাগজপত্র পাঠাতেও নানা ধরনের বিড়ম্বনা ও হয়রানি হতে হতো।  রাজধানীর কয়েকটি স্থান ঘুরে দেখা যায়, আগের পোজ মেশিনেই চলছে জরিমানা আদায়ের কার্যক্রম। ২৮ অক্টোবর কাকরাইলে ফুটপাথে উঠিয়ে দেওয়ায় এক ব্যক্তির মোটরসাইকেল আটকে দেন সার্জেন্ট হাফিজুর রহমান। ফুটপাথে মোটরসাইকেল চালানোর অপরাধে তাকে ৪০০ টাকা জরিমানা করেন। তখন ওই ব্যক্তি ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ডে জরিমানা পরিশোধ করতে চাইলে তা নিতে অস্বীকৃতি জানান সার্জেন্ট।

ডিএমপির সাবেক কমিশনারের ৪ আগস্টের বিষয়টি নজরে আনা হলে তিনি বলেন, সেটি এখনো চালু হয়নি। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, সাবেক কমিশনারের উদ্বোধনের পরই আমরা পোজ মেশিনে অন দ্য স্পটে জরিমানা পরিশোধের পদ্ধতি চালু করেছিলাম। নতুন আইন হওয়ার পর পোজ মেশিনে জরিমানা আদায় বন্ধ রয়েছে। নতুন আইন বাস্তবায়নের আগে কেন ওই সার্জেন্ট পোজ মেশিনে ক্যাশ কার্ড, ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ডে জরিমানা ঘটনাস্থলেই আদায় করেননি তা আমি জানি না। তবে নতুন আইন অনুযায়ী সিস্টেমটাকে আমরা ঢেলে সাজাচ্ছি। শনিবার এবং গতকাল ডিএমপির ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত দুই শতাধিক লোক সেখানে অপেক্ষা করছেন তাদের জব্দ হওয়া ডকুমেন্ট সংগ্রহের জন্য। জরিমানার টাকা ইউক্যাশে পরিশোধ করে সেখানে তিন লাইনে বিভক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। আবদুর রহিম নামে একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ১৭ অক্টোবর পল্টনে তাকে ৮০০ টাকার মামলা দেয় দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট। ঘটনাস্থলে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে চাইলে ওই সার্জেন্ট তাকে ইউক্যাশে টাকা পরিশোধ করে শান্তিনগরে তাদের ডিসি অফিসে গিয়ে ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে বলেন। টাকা ইউক্যাশে জমা দিয়ে সপ্তাহখানেক পর ডিসি অফিসে এসে দেখেন তার মোটরসাইকেলের জব্দ হওয়া ইন্স্যুরেন্সের কাগজ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে ২ নভেম্বর আবার যোগাযোগ করতে বলেন। এভাবে বারবার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর