শনিবার, ৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

উপেক্ষিত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

উপেক্ষিত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা

নগরীর স্টেশন রোড থেকে ছবিটি তোলা -দিদারুল আলম

চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেটের স্টেশন রোড এলাকা। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে স্বাভাবিক সময়ে যানজট নিত্যসঙ্গী। অঘোষিত লকডাউনের মধ্যেই খুব একটা পরিবর্তন হয়নি সড়কের চিত্র। সারি সারি গাড়ি লম্বা লাইন আর যানজটে নাকাল স্থানীয় লোকজন। সামাজিক দূরত্ব মানার ক্ষেত্রে বেপরোয়া লোকজন ও পরিবহনের আনাগোনায় সরগরম স্টেশন রোড এলাকা। ঠিক অভিন্ন চিত্র নগরী ও জেলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাও। চট্টগ্রামের কোথাও মানা হচ্ছে না সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব। এমন অবস্থায় শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে মনোনিবেশ করছে প্রশাসন। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেন বলেন, ‘শপিং মল, দোকানপাট সীমিত পরিসরে খোলার পর সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমরা শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতের ওপর জোর দিচ্ছি। একই সঙ্গে সবার প্রতি অনুরোধ থাকছে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে চলাফেরা করার।’ বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তাকারী সেনা দলের সমন্বয়কারী ২৪ পদাতিক ডিভিশনের মেজর আবু সাঈদ বলেন, ‘লোকজন যেভাবে ঘর থেকে বের হয়ে আসছে তাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমরা শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে কাজ করছি। একই সঙ্গে লোকজন যাতে হ্যান্ড গ্লাভস ও মাস্ক পরে ঘর থেকে বের হয় তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সেনাবাহিনী।’ অঘোষিত লকডাউনের সময়কাল দীর্ঘ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় সামাজিক দূরত্ব মানার ক্ষেত্রে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মানুষ। ঘর থেকে বের হয়ে আসছে লোকজন। গ্লাভস পরা তো দূরের কথা মাস্কও পরতে অনীহা লোকজনের। শহরের অলিগলি ও গ্রামগঞ্জের দোকানপাট সর্বত্র লোকজনের পদচারণা এবং আড্ডায় সরগরম। নগরী ও জেলার বিভিন্ন বাজারের অবস্থা আরও ভয়াবহ। প্রশাসনের উদ্যোগে বাজার খোলা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হলেও বাজার করতে আসা ক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব মানছে না। শুধু তাই নয়, অনেকেই পণ্য কিনতে আসছেন মাস্ক ছাড়াই। বাজারকেন্দ্রিক মোটরচালিত রিকশাগুলোতে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে ২ থেকে ৪ জন।  সেনাবাহিনীর টহল টিম কিংবা প্রশাসনের লোকজনকে  দেখে অনেকেই মাস্ক পরলেও তারা চলে যাওয়ার পর ফের পকেটে পুরছে মাস্ক। আগামীকাল ১০ মে সীমিত পরিসরে দোকানপাট, শপিংমল খোলার অনুমতি দেওয়া হলেও গতকাল থেকেই খুলেছে বেশির ভাগ দোকানপাট। তার চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা নগরীর ফুটপাথ দোকানগুলোর। নগরীর বেশির ভাগ ফুটপাথে বসতে শুরু করেছে হকার। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে রাস্তার ওপর চলছে বেচাকেনা। স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম না মেনে জনসমাগম ঘটিয়ে  বেচাকেনার ফলে বেড়েছে করোনার ঝুঁকি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এতদিন প্রশাসনের ভূমিকার কারণে করোনা পরিস্থিতি ধারণার চেয়ে অনেকটা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু দোকানপাট খুলে দেওয়ার কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। এখন শুধু সামাজিক দূরত্ব নয়, শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করাও কঠিন হয়ে পড়বে। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর