করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে আগামীকাল (১ জুন) থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আপত্তি উপেক্ষা করে উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলীর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় অতিরিক্ত রেজিস্টার বিজয় কুমার ব্রহ্ম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।  অভিযোগ উঠেছে, জুন ফাইনাল সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্ধশত কোটি টাকা খরচ দেখাতেই তড়িঘড়ি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করছেন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্রে জানা  গেছে, দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ও ডিসট্যান্স ক্লাস ছাড়া যাবতীয় কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  গত ২৮ মে ইউজিসি প্রজ্ঞাপন জারি করে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ জুন পর্যন্ত সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালুর বিজ্ঞপ্তি জারি করে পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তকে অবিবেচনা প্রসূত উল্লেখ করে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রায় ৬০ কোটি টাকা চলতি অর্থবছরে ছাড় হয়েছে। যার মাত্র পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। জুন ফাইনালের মধ্যে বাকি টাকা বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে খরচ করতেই সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার বিজন কুমার বলেন, ‘ভিসি স্যারের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার নোটিস করেছি।  ইউজিসির সিদ্ধান্ত অমান্য হয়েছে কিনা- তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।’ পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক রোস্তম আলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনাটি সঠিক নয়। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও সীমিত পরিসরে খুলছে। জরুরি কিছু প্রশাসনিক কাজ থাকায় অফিস খোলা হচ্ছে।’  উন্নয়ন প্রকল্পের অব্যবহৃত ৬০ কোটি টাকা খরচ করতেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সঠিক নয়।’