বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

৪৯ বছর পর ভবন পাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড

আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

রফিকুল ইসলাম রনি

স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর আজ নিজস্ব ভবন পাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতদিন বিভিন্ন স্থানে ভাড়া অফিস নিয়ে কার্যক্রম চললেও রাজধানীর গ্রিন রোডে আজ উদ্বোধন করা হচ্ছে নিজস্ব ‘পানি ভবন’। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পানি ভবন নির্মাণের উদ্দেশ্য হচ্ছে পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন সাধন। বন্যা, খরা, জলাবদ্ধতা, আন্তর্জাতিক নদীর প্রবাহ, লবণাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ও প্রাকৃতিক পরিবেশের যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি, মৎস্য, বন ইত্যাদি ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পানি সম্পদের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা করা। সর্বোপরি ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে যুগোপযোগী ও আধুনিক কর্মপরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তা নীতিনির্ধারণ করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রায় ২৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২তলা বিশিষ্ট পানি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রতি বছর বেসরকারি ভাড়া বাড়িতে প্রদত্ত ভাড়ার ৫.৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় করাই মূলত ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মীদের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ পাবেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ভবনে থাকছে, উন্নত ব্যবস্থাপনা, কার্যক্রম সমন্বয় ও পরিবীক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫টি সংস্থার দফতর। প্রতিটি সংস্থার কারিগরি, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের সহজতর সমন্বয় সাধন করা।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বিদ্যুতের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সে কারণে বিদ্যুৎ ভবনে এ অফিসের কার্যক্রম চলে আসছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেখলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব অফিস নেই। তখন তিনি এ ভবন নির্মাণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। শামীম বলেন, এর মাধ্যমে ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে আমরা এক ধাপ এগিয়ে যাব। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন এটাই তার প্রমাণ। জানা গেছে, ১৯৫৭ সালে জাতিসংঘের অধীনে গঠিত ক্রুগ মিশনের সুপারিশক্রমে এ অঞ্চলের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ইপিওয়াপদা) গঠন করা হয়। বর্তমান বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ইপিওয়াপদা পানি উইং হিসেবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কৃষি ও মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রধান সংস্থা হিসেবে কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করে। ১৯৭২ সালে ইপিওয়াপদার ‘পানি উইং’ নিয়ে ‘বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড’ (বাপাউবো) নামে স্বতন্ত্র সংস্থা সৃষ্টি হয়। কিন্তু নিজস্ব কোনো ভবন ছিল না। আজ এর অবসান হতে যাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকেও সংস্থায় রূপ দানের চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে জানা গেছে। সূত্রমতে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব প্রকৌশলীদের নকশায় প্রায় ৪,২০,০০০ বর্গফুটবিশিষ্ট এ ভবনের নির্মাণে লেগেছে প্রায় সাড়ে চার বছর। কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পানি ভবনে সোলার প্যানেল, সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, রেইন ওয়াটার রিজার্ভারের মতো পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাসহ ৫৩৬ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন অডিটরিয়াম, ৪৫০০ বর্গফুটের হেলিপ্যাড, ৩৭৬টি গাড়িপার্কিংসহ অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে। উপরন্তু এই কমপ্লেক্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মৃতিবিজড়িত পুকুরটি (২১,৪৮৪ বর্গফুট) সংরক্ষণ করা হয়েছে ও ২০,৬২৫ বর্গফুটের একটি জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর