বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই নির্বাচন কমিশন (ইসি) আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন হিসেবে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। গতকাল বিকালে ঠাকুরগাঁওয়ের কালীবাড়ির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, এই কমিশনের কাছ থেকে কখনই সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আবারও প্রমাণ করলো যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এদেশে কখনই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে এ দেশে একটা নির্বাচন হয়েছে। যেখানে কেউ ভোট দিতে যায়নি। ১৫৪টা আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হন তারা। তখন থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন এই প্রক্রিয়া আরও তীব্র হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে পড়েছে। ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তবে বিএনপি মনে করেছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে হয়তো ভোটাররা ভোট দিতে আসবে। কিন্তু এখানেও তারা ভোট দিতে আসেনি। এটার জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার। ৯টি উপজেলায় ৪২টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার সময় একটা খবর পেয়েছি প্রায় সবগুলো কেন্দ্রে একই ঘটনা ঘটেছে। যাত্রাবাড়ি ও নওগাঁয় একই কায়দায় নির্বাচন হয়েছে। পাবনা-৪ এ একই চেহারা লক্ষ্য করা গেছে। যে চেহারা ছিল ২০১৮ তে। নির্বাচনের আগের দিন রাতেই ব্যালট ভরে নির্বাচন হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের পদত্যাগ চেয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি তো আমাদের পদত্যাগ চাইবেনই। কারণ আমরা যে তাদের পদত্যাগ চেয়েছি। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তনে বিশ্বাস করি। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি হিসেবে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন ঢাকায় নির্বাচন হলো সেখানে ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু ভোটারের সংখ্যা যেটা দেখানো হয়েছে সে ব্যাপারে আর আর কি বলবো!
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার সেদিন বলেছেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। এর উপর আর কি বক্তব্য থাকতে পারে। এটা প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। জোর দিয়ে বলতে চাই- এই নির্বাচন কমিশন যদি পরিবর্তন না হয়, নির্বাচনকালীন সরকার যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে বাংলাদেশে আর কখনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, দুলাল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম শরিফ, দপ্তর সম্পাদক মামুন অর রশিদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, জয়নাল আবেদীন, আশিকুর রহমানসহ বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।