মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

লকডাউনের ঘোষণায় সড়কে চাপ, প্রচণ্ড ভিড় নৌপথে

প্রতিদিন ডেস্ক

লকডাউনের ঘোষণায় সড়কে চাপ, প্রচণ্ড ভিড় নৌপথে

সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের খবরে গতকাল রাজধানীতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

লকডাউনকে সামনে রেখে গতকালও প্রচণ্ড ভিড় ছিল নৌপথে। পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কে ছিল ব্যাপক চাপ, ছিল যানজট। বিশেষ করে রাজধানী থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী মানুষের চাপে উভয় রুটেই ছিল যানবাহন এবং মানুষের গাদাগাদি। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- মুন্সীগঞ্জ : করোনা প্রাদুর্ভাব রোধে চলতি বছরের দ্বিতীয় ধাপে লকডাউনকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে গতকাল ঘরমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। মানিকগঞ্জ : সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণায় পাটুরিয়া ঘাটে ছোট গাড়ির চাপ ছিল প্রচণ্ড। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাতায়াতের অন্যতম পথ পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌপথ। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস বন্ধ থাকলেও প্রচুর প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস চলাচল করেছে। ফলে পাটুরিয়া ঘাটে আটকে পড়ে শত শত যানবাহন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যক্তিগত গাড়ি পার করায় প্রায় ৩০০ পণ্যবোঝাই ট্রাক পারের অপেক্ষায় আটকে পড়ে। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, লকডাউনের কারণে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসের অতিরিক্ত চাপ পড়ে। পাশাপাশি ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রীও পারাপার হয়। এই নৌরুটে ছোট-বড় ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস পারাপার করায় পণ্যবোঝাই ট্রাক পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। ঘাটে ২ শতাধিক পণ্যবোঝাই ট্রাক পারের অপেক্ষায় রয়েছে।

রাজবাড়ী : কঠোর লকডাউন ঘোষণার খবরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী মানুষের ছুটে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষজন প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফেরিতে গাদাগাদি করে নদী পাড়ি দিচ্ছেন। দূরপাল্লার পরিবহন না চলায় গতকালও নদী পাড়ি দিয়ে মানুষ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা, মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে গেছেন। লকডাউন ঘোষণার কারণে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পণ্যবাহী গাড়ির চাপও বেড়েছে। অন্যান্য সময় অল্পসংখ্যক ফেরি দিয়েই ঘাটে আটকে থাকা যানবাহন পারাপার স্বাভাবিকভাবেই করা হয়েছে। তবে রবিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে অতিরিক্ত গাড়ি আসতে থাকায় পণ্যবাহী গাড়ির দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) ফিরোজ শেখ বলেন, লকডাউন ঘোষণায় মানুষজন ঈদের মতো নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছেন। অন্যান্য দিন সকালে যানবাহনের চাপ তেমন না থাকায় ফেরিও কম চলেছে। অথচ রবিবার দিবাগত রাত থেকে যানবাহনের চাপও অনেক বেড়ে গেছে।

সিরাজগঞ্জ : গতকাল বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় থেমে থেমে যানজট দেখা দিয়েছে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীবাস ও পণ্যবাহী ট্রাকসহ ব্যক্তিগত গাড়ির চাপের পাশাপাশি রাস্তায় যানবাহন বিকলের কারণে এ যানজটের সৃষ্টি হয়। চলমান লডডাউনের মধ্যেও যানজট সৃষ্টি হওয়ায় যাত্রী-চালক ও ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোসাদ্দেক হোসেন জানান, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে দুর্ঘটনার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থেকে মুলিবাড়ী পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকায় থেমে থেমে চললেও মুলিবাড়ী থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলী জানান, সরকার ১৪ তারিখ থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। এ কারণে রবিবার থেকে বিভিন্ন জেলার বিপুল সংখ্যক যানবাহন রাস্তায় নেমেছে। ফলে মহাসড়কে থেমে থেমে যানযটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও রাত থেকে সকাল পর্যন্ত মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে যানবাহন বিকল ও দুর্ঘটনা ঘটায় যানজটের তীব্রতা বেড়ে যায়।

কুমিল্লা : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় গতকাল দীর্ঘ সময় ধরে যানজটে আটকা ছিলেন যাত্রীরা। দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শহীদনগর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোররাত থেকে এই যানজট শুরু হয়। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। কঠিন লকডাউনের ঘোষণার কারণে বাড়িমুখী অতিরিক্ত গাড়ির চাপে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিকালে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই এলাকায় যানবাহন ধীর গতিতে চলছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর