মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

সূর্যমুখী ফুলে মিলবে ৭ কোটি টাকা মূল্যের তেলের বীজ

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

সূর্যমুখী ফুলে  মিলবে ৭ কোটি টাকা মূল্যের তেলের বীজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কৃষকের মাঠ  জুড়ে এখন কেবল হলুদের সমারোহ। সবুজ গাছের ডগায় হলুদ সূর্যমুখী ফুল আপন রঙে রাঙিয়ে তুলেছে প্রকৃতিকে। সূর্যমুখীর হলদে আভায় বিমোহিত দর্শনার্থীরাও। তবে সৌন্দর্যের এই সূর্যমুখী ফুলেই রয়েছে বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা। আর তাই চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এবার ১৫৭২ মেট্রিক টন সূর্যমুখীর তেলের বীজ পাওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ। যার বাজার মূল্য ৭ কোটি টাকারও বেশি। জেলা কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, গত বছর প্রথম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা এখন নিয়মিত হচ্ছেন সূর্যমুখী ফুল চাষে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছর জেলার সব উপজেলায় ৭৮৬ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের তত্বাবধানে প্রায় ২ হাজার কৃষক ১২০ হেক্টর জমিতে হাইসন-৩৩ ও ৬৬৬  হেক্টর জমিতে আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ফুল চাষ করছেন। কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও বীজ  দেওয়ায় কৃষকদের তেমন খরচও হচ্ছে না সূর্যমুখী ফুল চাষে।

মূলত সূর্যমুখী ফুল থেকে তেলের বীজ সংগ্রহ করা হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে অন্তত ২ টন তেলের বীজ পাওয়া যায়।  সে হিসেবে আবহাওয়া ভালো থাকলে এবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া  থেকে ১৫৭২ মেট্রিক টন তেলের বীজ পাওয়া যাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। প্রতি কেজি তেলের বীজ বাজারে বিক্রি হয় ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।

কৃষি বিভাগ বলছে, ৭৮৬ হেক্টর জমিতে এবার ৭ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের তেলের বীজ পাওয়া যাবে। আর এসব বীজ ভাঙিয়ে তেল হবে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০  কেজির মতো। ১৫০ টাকা কেজি দরে যার বাজার মূল্য প্রায় ৯ কোটি টাকা। যদিও অধিকাংশ কৃষক ঘানিতে না ভাঙিয়ে তেলের বীজ বাজারে বিক্রি করে দেন। এই বীজ  থেকে তেলের পাশাপাশি খৈলও পাওয়া যায়। এছাড়া সূর্যমুখী ফুলের গাছও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাদিউল ইসলাম ভূইয়া জানান, গত জানুয়ারি মাস  থেকে কৃষকরা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের বীজ রোপণ শুরু করেন। রোপণের দুই মাস পর গাছে ফুল ফুটে। আর  ফোটার পর ফুল পরিপক্ব হতে সময় লাগে আরও অন্তত ১৫ দিন। আগামী এপ্রিল মাস থেকেই কৃষকরা তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর