মঙ্গলবার, ২২ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

মুঘল ঐতিহ্য নিয়ে যাত্রা করল আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুঘল ঐতিহ্য নিয়ে যাত্রা করল আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট

রাজধানীর ৩০০ ফিটসংলগ্ন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় গতকাল ‘আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট’ উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

একসময়ের জগজ্জোড়া সুখ্যাতি ছড়ানো মুঘল ঐতিহ্যের রান্না নিয়ে ঢাকায় যাত্রা করল ‘আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট’। গতকাল এ রেস্টুরেন্টের রাজসিক উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে গজল পরিবেশন করেন বিশিষ্ট শিল্পী সুফি মোহম্মদ জিশান। রাজধানীর ৩০০ ফিটসংলগ্ন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) মুঘল সাম্রাজ্যের হারানো ঐতিহ্য ও মুঘলদের প্রকৃত খাদ্যাভ্যাস সবার কাছে পরিচিত করাতে এ রেস্টুরেন্ট নিয়ে এসেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। সভাপতিত্ব করেন বসুন্ধরা গ্রুপের সেক্টর-এ মার্কেটিং এবং আইসিসিবির সিওও এম এম জসীম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে ইমদাদুল হক মিলন বলেন, মুঘলদের রান্নায় স্বাদ, রাজকীয়তার এ মেলবন্ধন যুগের পর যুগ মানুষের তৃপ্তি দিয়ে আসছে। আজও আমরা এ লোভনীয় খাবারের রসাস্বাদন করি। কিন্তু সত্যিকার সেই স্বাদ আয়োজনের ঘাটতি বর্তমানে লক্ষণীয়। ধন্যবাদ বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষকে এবং আইসিসিবিকে এ সাহসিক পদক্ষেপের জন্য। আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট কেবল উদরপূর্তির মাধ্যম হওয়ার জন্য আসেনি, এসেছে একটা ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে। এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, মুঘল রাজপরিবারের আদবকেতা, পোশাক-আশাক ও খাদ্য যেন এক হিরণ¥য় ইতিহাস। একেকটি রহস্যে ঘেরা গল্প। সে জৌলুসময় জীবনাচরণের ইতিহাস আজ বিলুপ্তপ্রায়। মুঘলদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে জানতে চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি তাদের ঐতিহ্য ধারণ করতে। আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্টে ঢাকার মানুষ পরখ করতে পারবে সেসব অসাধারণ খাবারের আয়োজন এবং উপলব্ধি করতে পারবে রাজসিক জীবন। তিনি জানান, মুঘলদের পৃষ্ঠপোষকতায় এ উপমহাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি, ভাষা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদিতে ঘটেছে পরিবর্তন। মুঘলে ধরে আসে বিভিন্ন মজাদার খাবারগুলো। তবে এ মুঘল খাদ্যশৈলী কিন্তু এক দিনে আসেনি। ক্রমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুঘলদের প্রচেষ্টার ফলে এসেছে মুঘল রন্ধনশৈলী এবং সেই মুঘল রন্ধনশৈলী থেকে মুঘলাই খাবার। লিজি কলিং লেখা Curry : A Tale of Cooks and Conquerors -এর বইটি পড়ে জানা যায়, বাবরপুত্র হুমায়ুন শেরশাহের যুদ্ধে কোণঠাসা হয়ে পারস্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারপর যুদ্ধে জয়লাভের পর পারস্য থেকে বগলদাবা করে কয়েকজন পারসিক বাবুর্চি নিয়ে আসেন। মসলার গুণেই হোক কিংবা মুঘলদের রসুইঘরের বাবুর্চিদের হাতের জাদুতেই হোক, সেই সময় থেকেই মুঘল রান্নার জগজ্জোড়া সুখ্যাতি। নামে-বেনামে সেই সুখ্যাতিকে উপজীব্য করে বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকায় প্রচলিত রকমের মুঘলাই খাবারে ঠাসা। কিন্তু এর অধিকাংশই মানহীন এবং মুঘল মর্যাদার বিপরীত, ক্ষেত্রবিশেষ বিলুপ্তপ্রায়। সেই বিলুপ্ত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট।

সর্বশেষ খবর