মঙ্গলবার, ১০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আতঙ্ক

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। এখন আবার নতুন আতঙ্ক ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগ। চট্টগ্রামে এরই মধ্যে দুজন ফাঙ্গাস রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর  মধ্যে গতকাল একজনের অপারেশন করা হয়েছে, অন্যজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। দুজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের রোগী পাওয়ায় অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে।  

জানা যায়, গত ২৪ জুলাই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে ষাটোর্ধ এক নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে নমুনা পরীক্ষায় তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। তিনি করোনায়ও আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুস্থ হওয়ার পর তার শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। ওই নারীর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে। গতকাল সোমবার ওই রোগীর অস্ত্রোপচার হয়। চমেক হাসপাতালের চক্ষু, নাক কান গলা, মেডিসিনসহ বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাছাড়া গত রবিবার আরও একজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগী শনাক্ত হয়েছে। ৪০ বছর বয়সী ওই পুরুষ রোগীর চোখে এ ছত্রাক বাসা বাঁধে। গত ৬ আগস্ট থেকে এ রোগী চমেক হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায়। তিনি ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী। এ রোগী করোনার দুই ডোজ টিকাও দিয়েছেন এবং করোনায় আক্রান্ত হননি। তারপরও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুব্রত পাল বলেন, প্রথম রোগীর অপারেশন হয়েছে। তিনি এখন চিকিৎসাধীন আছেন। দ্বিতীয় রোগীর চোখ ও দাঁতের ব্যথা নিয়ে ভুগতেছিলেন। গত ৫ আগস্টের পরীক্ষায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়। তার চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুজন রোগীই আমাদের পর্যবেক্ষণে আছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ রোগের প্রধান ওষুধ ইনজেকশন অ্যামফোটেরিসিন-বি। তবে এই ইনজেকশনের দাম বেশি এবং দুর্লভ। তাই রোগীর চিকিৎসায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক রোগীর জন্য প্রতিদিন ৬ ভায়াল করে ১৪ দিন অ্যামফোটেরিসিন-বি ইনজেকশনটি দিতে হবে। প্রতি ভায়ালের মূল্য ১৫ হাজার টাকা করে হলে দিনেই ব্যয় ৮৪ হাজার টাকা। এই ইনজেকশন আনতে হয় ভারত থেকে। এর সঙ্গে আছে অন্যান্য চিকিৎসা ব্যয়। 

চিকিৎসকরা বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসা মূলত নির্ভর করে সংক্রমণের তীব্রতার ওপর। সেজন্য কিছু ওষুধ আছে। আবার তীব্রতা বেশি হলে ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়। এ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের দাম বেশি এবং রোগীর নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হয় বলে এই চিকিৎসা ব্যয়বহুল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর