মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

টাকা দিয়েও মেলে না জরুরি চিকিৎসা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের ঘাটফরহাদবেগ এলাকার বয়োবৃদ্ধ খোরশেদ আলম ১৮ আগস্ট রাত ১১টায় স্ট্রোক করেন। মুহুর্তেই তাকে নেওয়া হয় নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। রাত ১২টায় তাকে ভর্তি করা হলে চিকিৎসায় এগিয়ে আসেন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় বিশেষ কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরদিন সকালে হাসপাতাল থেকে বলা হয়, নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞকে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি দুপুরে বা বিকালে আসবেন। এরই মধ্যে আর কোনো চিকিৎসা মেলেনি। সন্ধ্যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এলে ১৯ ঘণ্টা পর শুরু হয় ওই রোগীর চিকিৎসা। রোগীর ছেলে ইরশাদুল আলম বলেন, ‘দ্রুত চিকিৎসা পাওয়ার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে যাই। সেখানে রাত ১২টায় ভর্তি করে চিকিৎসা মিলেছে ১৯ ঘণ্টা পর। কিন্তু স্ট্রোকটা যদি একটু গুরুতর হতো কিংবা মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হতো, তখন কী হতো। বিলম্বের কারণে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হতে পারত। এক কথায় বলতে হয়, টাকা দিয়েও দ্রুত জরুরি চিকিৎসা মেলেনি।’  অভিযোগ আছে, বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা দেন এমবিবিএস পাস করা চিকিৎসকরা। কিন্তু সংকটাপন্ন মুহুর্তে এসব চিকিৎসক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে পারেন না। হাসপাতালে নেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। এ কারণে মুমূর্ষু রোগীকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় না।

 অপেক্ষা করতে হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের। এরই মধ্যে অনেক রোগীর তৈরি হয় মুমূর্ষু অবস্থা।

জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটি, চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে যায় দ্রুত জরুরি চিকিৎসা পেতে। এখন সেখানে যদি বিলম্ব হয় তাহলে সেটা দুঃখের। এ জন্য প্রয়োজন বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা। প্রতিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বেসিক বিষয়ের (মেডিসিন, সার্জারি ও শিশু) ওপর দক্ষতা সম্বলিত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়া, হাসপাতালের নিজস্ব সার্বক্ষণিক কনসালটেন্ট রাখা, সময়ানুবর্তিতা রক্ষা করেন এমন চিকিৎসককে খবর দেওয়া এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে যথা সময়ে কনসালটেন্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। এমনটি হলে মুমূর্ষু রোগীরা দ্রুত চিকিৎসা পাবেন। 

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরে ৯১টি ও ১৪টি উপজেলায় রয়েছে ৬৩টি অনুমোদিত হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর মধ্যে আনোয়ারা উপজেলায় দুটি, বাঁশখালীতে তিনটি, বোয়ালখালীতে দুটি, চন্দানাইশে তিনটি, ফটিকছড়িতে সাতটি, হাটহাজারীতে ১০টি, লোহাগাড়ায় ছয়টি, মিরসরাইয়ে আটটি, পটিয়ায় তিনটি, রাউজানে তিনটি, সীতাকুন্ডে পাঁচটি, সাতকানিয়ায় পাঁচটি ও স›দ্বীপে দুটি। তবে নগর ও উপজেলার অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানের কোনো তালিকা নেই।  

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর