বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ই-ফাইলিং চালু হলে মামলার জট থাকবে না : প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ই-জুডিশিয়ারি ও ই-ফাইলিং চালু হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মামলার জট থাকবে না। মামলাজট থেকে ভার্চুয়াল আদালতই মুক্তি দিতে পারবে। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে ডিজিটাল আর্কাইভিং এবং ই-ফাইলিং ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আইন সচিব গোলাম সারোয়ার। এ সময় আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন। মামলার জট কমাতে ভার্চুয়াল কোর্টের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, করোনাকালীন সময়ে ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে বিচারকদের পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য। সেদিন প্রধানমন্ত্রীকে বললাম, কোর্ট তো ফাংশন করছে না। সারা পৃথিবীতে কোর্ট চলছে। তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন ভার্চুয়াল কোর্ট করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, সেই সময়ে ভার্চুয়াল কোর্ট আইন করা কঠিন ব্যাপার ছিল, এর পরও আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যে আইনটা করতে পেরেছি। তিনি বলেন, সব কোর্ট বন্ধ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, জেলখানা আমার পক্ষে কন্ট্রোল করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু একটা করেন। আইনজীবীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা কোর্টে যাবেন না। ভার্চুয়াল কোর্ট হওয়ার পর আমরা ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে এক লাখ মানুষকে জামিন দিতে পেরেছি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে আরও বলেছিলাম, লাখ লাখ ফাইল আমাদের বারান্দায় পড়ে আছে। আমি একদিন আমাদের বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল, তখন তিনি বারের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তাকে নিয়ে দেখলাম লাখ লাখ ফাইল বারান্দায় পড়ে আছে। তারপর গেলাম ক্রিমিনাল সেকশনে। সেখানেও একই অবস্থা। এখান থেকে ফাইল খুঁজে বের করে কোর্টে দেওয়া দুঃসাধ্য কাজ।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে জুডিশিয়ারি পৃথক হয়েছে। এখনো সব জায়গায় ভবন হয়নি। আমরা বিচারক দু-তিন গুণ করব। তাদের কোথায় বসাব? একমাত্র ভার্চুয়াল কোর্ট যদি প্রবর্তন করা যায় তাহলে বিচারকের বাসায় থেকে, আইনজীবীদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তাহলে অচিরেই আমরা মামলার জট থেকে মুক্তি পেতে পারব। তা ছাড়া মামলার জট থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন ব্যাপার।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ভারতে ২৪ ঘণ্টা ফাইল করা যাচ্ছে। আমাদের এই ব্যবস্থা চালু করা দরকার। আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে আমার যে উত্তরসূরি আসবেন তিনি যদি এটা করেন, বিচার বিভাগে একটা বিপ্লব ঘটে যাবে। শুধু তাই নয়, এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যে জায়গায় যাচ্ছে, শুধু মুখে কথা বলবেন, লেখা হয়ে যাবে; কষ্ট অনেক কমে যাবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এমন জায়গায় যাবে যে জুডিশিয়ারিতে কোনো পেন্ডিং মামলা থাকবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর