বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

আজ থেকে পশু বেচাকেনা শুরু ঢাকার অস্থায়ী হাটে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী হাটগুলোয় পশু বেচাকেনা শুরু হচ্ছে আজ। এ হাটগুলো ঈদের দিনসহ পাঁচ দিন চালু থাকবে। আর গাবতলী ও সারুলিয়া স্থায়ী হাটে পশু কেনাবেচা হচ্ছে আগে থেকেই। তবে হাটে ক্রেতার আনাগোনা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যারা হাটে আসছেন তাদের মধ্যে অনেকেই পশু দেখে ও দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন। গতকাল আফতাবনগর, মেরাদিয়া, তেজগাঁও পলিটেকনিক মাঠসহ কয়েকটি হাট ঘুরে এমনই চিত্র দেখা যায়। দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ২১টি পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় বসছে ১০টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় বসছে ১১টি হাট। গতকাল দুপুরে আফতাবনগর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটটির বেশির ভাগ জায়গাতেই কোরবানির পশু রাখা আছে। পাশেই ব্যবসায়ী ও খামারিরা বসে খোশগল্প করছেন। হাটের উত্তর অংশের আবাসিক এলাকার পাশে কোনো গরু রাখা হয়নি।

হাটটির বেইলি ব্রিজের পাশেই রয়েছে ছাগলের হাট। সেখানে বিভিন্ন জাতের ছাগল ওঠেছে। ২০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাগলের দাম হাঁকছেন ব্যাপারীরা। হাটের সবচেয়ে বড় গরুগুলো আফতাবনগরের কৃষ্ণচূড়া রোডের পাশে পাওয়া যাবে। পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বড় আকারের গরু নিয়ে এখানে রেখেছেন।

পাবনার ব্যবসায়ী আকাশ জানান, এবার ১৬টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন তিনি। বড় গরুটির ওজন প্রায় ১৪ মণ। কালো রঙের এই ষাঁড় গরুটির দাম তিনি হাঁকছেন ৫ লাখ টাকা। লাল রঙের অন্য একটি গরুর ওজন ১০ মণ, যার দাম হাঁকাছেন ৪ লাখ টাকা।

১০টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন সিরাজগঞ্জের হামিদ মিয়া। তিনি জানান, এখনো কোনো গরু বিক্রি করতে পারেননি। দুই দিন ধরে ক্রেতারা আসছেন। গরু দেখে দাম করে চলে যাচ্ছেন। তার পাশে থাকা অন্য এক ব্যবসায়ী অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, এই হাটে সাধারণত মূল বেচাকেনা হয় ঈদের আগের দু-তিন দিন। সে হিসাবে বুধবার (আজ) থেকে বেচাকেনা শুরু হবে বলে জানান তিনি।

ইজারাদার প্রতিনিধি মো. আকাশ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই হাটে খামারি ও ব্যাপারীদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের সদস্যরা রয়েছেন। একই সঙ্গে সিসি ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। রয়েছেন পশু ও মানুষের চিকিৎসার জন্য সার্বক্ষণিক ডাক্তার।’

তিনি বলেন, এ হাটে গরু, ছাগলসহ সব ধরনের পশুর সমাহার ঘটানো হয়েছে। যারা কম বাজেটে কোরবানি দেবেন তাদের জন্য ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু রয়েছে। বড় গরু যাদের পছন্দ তাদের জন্যও আকর্ষণীয় গরু রয়েছে এ হাটে। আর্থিক নিরাপত্তাসহ ব্যাপারীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

একই অবস্থা রাজধানীর তেজগাঁও পলিটেকনিক্যাল মাঠে বসানো হাটের। এই হাটটি ছোট হলেও পশুতে পরিপূর্ণ। হাটে কথা হয় কুষ্টিয়া থেকে আসা খামারি আবুল কাশেমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সোমবার সকালে ১৪টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছি। এখন পর্যন্ত কয়েকজন লোক দরদাম জিজ্ঞেস করেছেন, তবে কেনার জন্য ওই রকম দাম বলেননি।’ লাল-কালো মিশ্রিত গরুটির দাম কেমন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই গরুটি ১২ মণ ওজনের। দাম ৫ লাখ টাকা চাইব। তবে ৪ লাখ হলে ছেড়ে দেব। আর ১০ মণের ওজনের কালো গরুটির দাম চাইব সাড়ে ৪ লাখ টাকা। তবে ৩ লাখ ৭০-৮০ হাজারে ছেড়ে দেব।’

মেরাদিয়া হাটে সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধা থেকে ১০টি গরু এনেছেন দুই ব্যাপারী। সাইজ অনুযায়ী ১ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা দাম চাওয়া হচ্ছে গরুগুলোর। তবে এবার ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। পোস্তগোলার শ্মশানঘাট হাটে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে বাজারে অনেক গরু আনা হয়েছে। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ থেকে গরু নিয়ে এসেছেন পাইকাররা। তারা জানান, এখনো বিক্রি শুরু করতে পারেননি। অনেকেই দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন। তবে কাল-পরশুর মধ্যে বিক্রি শুরু হবে বলে আশা করছেন তারা। একই চিত্র ছিল সাইদনগর, উত্তর শাহজাহানপুরের হাটে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর