দেশের সব থানা ও কারাগারে প্রকৃত কয়েদি শনাক্তে আঙুল ও তালুর ছাপ এবং চোখের মণি স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক ডাটা পদ্ধতি চালুর বিষয়ে হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। দুই বিচারপতির স্বাক্ষরে গতকাল ৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছিলেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তিনটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রিটকারী ভুল আসামি জহির উদ্দীনের বিরুদ্ধে জারি করা পরোয়ানা অবৈধ এবং আইন বহির্ভূত ঘোষণা করা হয়েছে রায়ে। রায়ে বলা হয়, সারা দেশের সব পুলিশ স্টেশনে বিদ্যমান ক্রাইম ডেটা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ বা ফিঙ্গার প্রিন্ট, হাতের তালুর ছাপ (পাম প্রিন্ট), চোখের মণি স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা যুক্ত করে বায়োমেট্রিক ডাটা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করতে হবে।
দ্বিতীয় দফায় বলা হয়, বিদ্যমান চিহ্নিতকরণ ফরমের পাশাপাশি কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক শনাক্তকরণ পদ্ধতিতে তার মুখের ছবি যুক্ত করতে হবে। মুখের ছবি সমন্বিত তথ্য ভাণ্ডারে আপলোড করতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পরপরই তার মুখের ছবি ধারণ করা সংশ্লিষ্ট পুলিশ স্টেশনের প্রথম কাজ হওয়া উচিত।
রায়ে আরও বলা হয়, দেশের সব কারাগারে আঙুলের ছাপ বা ফিঙ্গার প্রিন্ট, হাতের তালুর ছাপ (পাম প্রিন্ট), চোখের মণি (আইরিশ) স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা যুক্ত করে বায়োমেট্রিক ডাটা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করতে হবে।
গত বছরের জুনে জহির উদ্দীন নামের এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে জারি করা পরোয়ানা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট দায়ের করেন। পরে ওই রিটের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৮ জুন হাই কোর্ট রুল জারি করেন। রুলে দেশের সব জেলখানায় কয়েদিদের শনাক্তে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আইরিশ স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক ডাটা পদ্ধতি চালু করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এরপর ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ৯ সেপ্টেম্বর রায় দেন হাই কোর্ট। রায়ে ভুল আসামি জহির উদ্দীনের বিরুদ্ধে জারিকৃত পরোয়ানা অবৈধ এবং আইন বহির্ভূত ঘোষণা করা হয়েছে।