শিরোনাম
সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসায় আস্থার সংকট

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স অর্পা (ছদ্মনাম)। তার স্বামীও চাকরি করেন চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগে। স্বামী-স্ত্রী দুজনই স্বাস্থ্য খাতে চাকরি করছেন। অথচ অর্পার নিজের সন্তান প্রসব হয়েছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। অর্পার স্বামী নাম প্রকাশ না করে বলেন, জেনারেল হাসপাতালে রাতের বেলায় চিকিৎসক পাওয়া যায় না। তাই ঝুঁকি থাকার শঙ্কায় সেখানে স্ত্রীকে ভর্তি করাইনি। কেবল অর্পা নন, এমন অনেকেই অবকাঠামোগত সুবিধা থাকার পরও জেনারেল হাসপাতালে গাইনি রোগীকে ভর্তি করান না। কেউ নিলে অবস্থা সামান্য সমস্যা দেখা গেলেও তাকে রাতের বেলায়ই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। ওই সময় রোগীরা পড়ে যায় ভোগান্তিতে। কোনো রোগী এ হাসপাতালের ওপর আস্থা রাখতে পারে না। সাধারণ রোগীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে আস্থার সংকট।

জানা যায়, গত জুন মাসে জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতি সেবায় নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে। দিনরাত সমানে প্রসূতি রোগীর নরমাল ও সিজার ডেলিভারি সেবা চালু করা হয়। কিন্তু এ নিয়ম চালু করা হলেও বাস্তবে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ আছে। জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, সাধারণ নিয়ম মতে, চিকিৎসকের নির্দেশনা নিয়ে মিডওয়াইফাররা ডেলিভারির দায়িত্ব পালন করেন। বিশেষ প্রয়োজন হলে চিকিৎসক সেখানে উপস্থিত থেকে চিকিৎসা দেন।

তবে আমরা মনে করি, সবারই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। তাতে সরকারি হাসপাতালের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে। তবে ক্ষেত্র বিশেষ নানা কারণে তা হয়ে ওঠে না।

জানা যায়, ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া হাসপাতালটি অনেকটা অবহেলায় পড়েছিল। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকত ১২০ থেকে ১৪০ জন। জনবল ও চিকিৎসা উপকরণ সংকটে রোগীরা বঞ্চিত হতো সেবা থেকে। ২০২০ সালের মার্চে কভিড সংক্রমণ শুরুর পর এটিকে চট্টগ্রামের একমাত্র ‘ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল’ ঘোষণা করা হয়। আড়াই বছরের ব্যবধানে হাসপাতালটি এখন চট্টগ্রামের স্বয়ংসম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। পর্যায়ক্রমে যোগ হচ্ছে নানা স্বাস্থ্যসেবা ও সেবা উপকরণ। করোনার প্রকোপ শুরুর পরই বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপন করা হয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট, সংস্থান হয় প্রায় ৩০টি হাই ফ্লো ন্যাজল ক্যানুলা, বসানো হয় ১৮ আইসিইউ এবং ছয়টি এইচডিইউ শয্যা, প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় অত্যাধুনিক ওয়াশিং প্লান্ট, বসানো হয় বাতাস থেকে মিনিটে ৫০০ লিটার অক্সিজেন উৎপাদন সম্পন্ন ‘জেনারেটর অক্সিজেন প্লান্ট’, গর্ভবতী মায়েদের বিনামূল্যে ক্যান্সার টেস্ট, ব্রেস্ট টেস্ট ও এইডস পরীক্ষা, প্যাথলজি বিভাগে চালু হয়েছে ডোপ টেস্ট, আগামীতে চালু হবে সিসিইউ ও ডায়ালাইসিস বিভাগ, নির্মাণ হবে ১০ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও রোগীর আস্থা তৈরি হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর