চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের স্টাফ করেসপনডেন্ট আবু আজাদ। এ সময় তাকে পিস্তল ঠেকিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের অফিসে নিয়ে দেড় ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা হয়। পরে স্থানীয় ইউপি মেম্বার নিজের ভিজিটিং কার্ড তার (আজাদ) পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে ‘ক্ষমতা থাকলে যেন কিছু করে’ বলে ছেড়ে দেন। গতকাল সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মঘাছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহন অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে মারধর করেন বলে জানান ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক।
আবু আজাদ বলেন, ‘মারধরের এক পর্যায়ে মোহনের মোবাইল ফোন দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আমার সঙ্গে কথা বলেন। আমার পরিচয় জানার পর তিনি আমাকে বলেন, এ রকম সাংবাদিক মেরে ফেললে কিছু হবে না। এরপর আমার গুগল ড্রাইভে ঢুকে তিনি সব ছবি-ভিডিও ডিলিট করে দেন এবং মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলেন। এরপর মোহন আমার পকেটে তার ভিজিটিং কার্ড ঢুকিয়ে দিয়ে ক্ষমতা থাকলে কিছু করতে বলে। আমাকে ছেড়ে দিলে আমি রাঙামাটি মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা নিই। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছি।’
সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাহী সদস্য আজহার মাহমুদ।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহন বলেন, ‘চেয়ারম্যানের নির্দেশে ওই সাংবাদিককে আনতে যাই। গিয়ে দেখি চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে মারধর করছে। তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে আমার অফিসে নিয়ে আসতে চাইলে তিনি রাজি হননি। পরে তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে আমার অফিসে আনি। তার মানিব্যাগ, এটিএম কার্ড, আইডি কার্ড আমার কাছে আছে। মোবাইলটা যেহেতু ভেঙে ফেলেছে, চেয়ারম্যানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কিনে দেব।’ ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মোহন আমাকে ফোন করে বলেছে, একজন ইটভাটার ছবি তুলছে। আমি মোহনের মোবাইল ফোন দিয়ে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে তাকে গাড়িতে তুলে দিতে বলেছি। আমি সেখানে ছিলাম না।’ রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কী বলেন, ‘সাংবাদিক মারধরের বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’