রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চউকের নতুন প্রকল্প নেই ১৬ বছর বাড়ছে মানুষ, বাড়ছে সংকট

৬৩ বছরে মাত্র ১২ আবাসন প্রকল্প

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চউকের নতুন প্রকল্প নেই ১৬ বছর বাড়ছে মানুষ, বাড়ছে সংকট

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৫৯ সালে। আবাসন সংকট নিরসনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় সংস্থাটি। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৬৩ বছর পার করলেও আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করেছে মাত্র ১২টি। ১৬ বছর ধরে নেই কোনো নতুন আবাসন প্রকল্প। উল্টো অপরিকল্পিত উদ্যোগের কারণে সলিমপুর আবাসিক এলাকা ও কর্ণফুলী আবাসিক এলাকা প্রায় পরিত্যক্ত এবং অনন্যা-২ প্রকল্পটি বাতিল করা হচ্ছে। নগরে প্রতিনিয়ত মানুষ বাড়লেও আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠেনি। ফলে তৈরি হচ্ছে আবাসন সংকট। বাড়ছে দুর্ভোগ। প্রত্যাশিত সেবা  থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ।

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, নগরে বছরে গড়ে ১০ শতাংশের বেশি হারে মানুষ বাড়ছে। এত বিপুলসংখ্যক মানুষের আবাসন গড়ার মতো ব্যবস্থা নগরে নেই। তাছাড়া সরকারি এ সংস্থাটির দৃশ্যমান কোনো তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না। গত ১০ বছরের ব্যবধানে নগরের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। অথচ গত ১৬ বছরে নগরে কোনো আবাসিক এলাকা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি চউক। সর্বশেষ ২০০৭ সালে ১ হাজার ৯৮৬টি প্লট নিয়ে হাটহাজারী এলাকায় অনন্যা আবাসিক-২ প্রকল্প গ্রহণ করলেও সেটি এখন বাতিল করা হচ্ছে। গত ৬৩ বছরে চউক মোট ৬ হাজার ৩৬৪টি প্লট বরাদ্দ দিয়েছে। তবে চউক নগরের বায়েজিদ বাইপাস এলাকায় প্রায় ৩৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯ দশমিক ৬৫ একর জায়গায় ১৬৭টি প্লট নিয়ে একটি আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহসভাপতি স্থপতি সুভাষ বড়ুয়া বলেন, চউকের কয়েকটি প্রকল্প পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে বলে জানি। তাছাড়া নতুন কোনো আবাসিক প্রকল্প গ্রহণ করেনি। এ কারণে মানুষকে আবাসনের জন্য বেশি মূল্যে জায়গা ক্রয় করতে হচ্ছে। মানুষ বাড়লেও আবাসন ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় সংকট বাড়ছে। 

চউকের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, নানা কারণে দীর্ঘদিন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। এরই মধ্যে কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো যাচাই-বাছাই ছিল না, ফিজিবিলিটি স্টাডিও ছিল দুর্বল। এর মধ্যে অনন্যাসহ কয়েকটি প্রকল্পে মানুষ বাড়ি তৈরিতে আগ্রহ দেখায়নি। তবে নতুন করে বায়েজিদ হাউজিং নামে একটি আবাসিক প্রকল্প করা হয়েছে। এখানে তুলনামূলক কম মূল্যে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে। 

চউক সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয় চউক। ১৯৬৩ সালে ৫৮টি প্লট নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা, ১৯৬৫ সালে ৩৯১টি প্লট নিয়ে তৈরি করা হয় আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, ১৯৭৩ সালে ৭৫৯টি প্লট নিয়ে করা হয় চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, ১৯৭৭ সালে ১৬৮টি প্লট নিয়ে করা হয় কর্নেল হাট সিডিএ আবাসিক এলাকা, ১৯৮৪ সালে ৯০৪টি প্লট নিয়ে করা হয় সলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকা, ১৯৯৫ সালে ৫১৭টি প্লট নিয়ে করা হয় কর্ণফুলী আবাসিক এলাকা, ২০০০ সালে ১৮০টি প্লট নিয়ে করা হয় চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকা, ২০০২ সালে ৮২টি প্লট নিয়ে তৈরি করা হয় চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা (দ্বিতীয় পর্যায়), ২০০৬ সালে ৪২৩টি প্লট নিয়ে করা হয় কল্পলোক আবাসিক এলাকা (প্রথম পর্যায়), ২০০৭ সালে ১৩৫৬টি প্লট নিয়ে নির্মাণ করা হয় কল্পলোক আবাসিক এলাকা (দ্বিতীয় পর্যায়), ২০০৮ সালে ১৪৭৮টি প্লট নিয়ে নির্মাণ করা হয় অনন্যা আবাসিক এলাকান্ড১। ২০০৯ সালে ৪৮টি প্লট নিয়ে নির্মাণ করা ষোলশহর পুনর্বাসন এলাকা, সর্বশেষ ২০০৭ সালে ১ হাজার ৯৮৬টি প্লট নিয়ে অনন্যা আবাসিক-২ প্রকল্প প্রতিষ্ঠা করা হলেও সেটি বাতিল করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর