বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সৌন্দর্য হারাচ্ছে খুলনা নগরী

নকশাবহির্ভূত ভবনের ছড়াছড়ি, অ্যাকশনে কেডিএ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

সৌন্দর্য হারাচ্ছে খুলনা নগরী

নিয়ম-নীতি ছাড়াই খুলনা নগরীতে অনুমোদনহীন ও নকশাবহির্ভূত ভবন গড়ে উঠছে। অনেক স্থানে গাদাগাদি করে ভবন তৈরি হওয়ায় রিকশাভ্যান নিয়ে চলাচলের মতো পথও নেই। ফলে এখানে বসবাসরতরা রয়েছেন চরম ঝুঁকিতে। হঠাৎ অসুস্থতায় অ্যাম্বুলেন্স বা অগ্নিকান্ডে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও গলিপথে প্রবেশ করতে পারে না। এ ছাড়া অনুমোদন নেওয়ার পরও অনেকে বাড়ির সামনে-পিছনে ও দুই পাশে আলো-বাতাস চলাচল বা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা রাখেন না। ইচ্ছা মতো ভবন বর্ধিত করায় কখনো একজনের ভবনের অংশ অন্যের বাড়ির ভিতর কিংবা সড়কের ওপর চলে গেছে। এতে শহরে সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জনভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। বৃষ্টি হলে ছাদের পানি পাশের বাড়ি, ভবনে বা সড়কে গিয়ে পড়ে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজেও বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। ফলে অনুমোদনহীন ও নকশাবহির্ভূত ভবন মালিকের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে নেমেছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)।  জানা যায়, সর্বশেষ ১৭ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্বপ্নপুরী আবাসিক এলাকায় নকশার বাইরে গিয়ে সড়ক ঘেঁষে ভবন নির্মাণ শুরু করায় মো. কামরুজ্জামানের বাড়ির বর্ধিত কলাম ও রডগুলো কেটে দেয় কেডিএর শ্রমিকরা। একইভাবে শেখপাড়ার বাগানবাড়িতে নির্মাণাধীন ভবনে অনুমোদিত নকশার বাইরে একটি সিড়ি নির্মাণ করা হচ্ছিল। সিড়িটি নির্মাণ হলে সড়কে ভবিষ্যতে যানজট তৈরির আশঙ্কা ছিল। ফলে সিঁড়ির রড ও বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলা হয়। জানা যায়, গত ছয় মাসে এভাবে প্রায় অর্ধশত ভবনের বর্ধিত অংশ উচ্ছেদ করা হয়েছে। এদিকে নাগরিক নেতারা বলছেন, যে কয়টি ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তার থেকেও বহুগুণ বেশি বাড়ি নিয়ম-নীতি ছাড়াই গড়ে উঠছে। নগরীর কেডিএ এভিনিউ, শেখপাড়া, সোনাডাঙ্গা আবাসিক, শিপইয়ার্ড এলাকা, নবীনগর, নবপল্লীর মতো জায়গায় একটি ভবনের গা ঘেঁষেই আরেকটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কোনো কোনো ভবনের বর্ধিত অংশ রয়েছে সড়কের ওপরে। বাড়ির সীমানার পর ড্রেন ছাপিয়ে দখল করা হয়েছে রাস্তার অংশও। এ ছাড়া শহরের নতুন বর্ধিত এলাকায় অসংখ্য নকশাবহির্ভূত ভবন গড়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে এসব এলাকায় লোকবসতি বাড়লে নাগরিক সেবা চরমভাবে ব্যাহত হবে। কেডিএর অথরাইজড অফিসার জি এম মাসুদুর রহমান জানান, সড়কের প্যারামিটারের ওপরে নির্ভর করে বাড়ির সামনে ৫ ফুট ও দুই বাড়ির মাঝে কমপেক্ষ ৬ ফুটের মতো ফাঁকা থাকতে হবে। যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বাড়ি মেরামত কাজের জন্য দুই ভবনের মাঝে এই পরিমাণ দূরত্ব রাখা হয়। তিনি বলেন, কেডিএ এখন ভবন নির্মাণকালীন সময়ে নকশাবহির্ভূত বর্ধিত অংশ উচ্ছেদে কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া অনুমোদনহীন ভবনের বিরুদ্ধেও কেডিএর নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর