ভিয়েতনাম বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে বাংলাদেশ সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গতকাল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির (এনএ) চেয়ারম্যান ভুং দিন হিউর নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। ‘ভিয়েতনাম বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে খুবই আগ্রহী,’ রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদিন গণমাধ্যমকে বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ারম্যান ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ যৌথভাবে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, যোগাযোগ, কৃষি, মৎস্য ও সংস্কৃতি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যমান সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে পারে। ভিয়েতনামের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ভিয়েতনামের সঙ্গে এবং প্রতিবেশী দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
‘বাংলাদেশ ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে... ভিয়েতনামের বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় বাজারে ব্যবহারের জন্য পণ্য তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য বাজারে, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বের বাজারে রপ্তানি করার জন্য বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ খুঁজে পেতে পারেন,’ রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ওষুধ, তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, টেক্সটাইল সামগ্রী, কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইলসহ আরও বাংলাদেশি পণ্য আমদানির কথা বিবেচনা করতে পারে।
রাষ্ট্রপ্রধান অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’র সদস্য হওয়ার জন্য ভিয়েতনামের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করেছেন।
রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, সাত বছর আগে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে ভিয়েতনাম সরকার এবং এর জনগণ অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে রাষ্ট্রপতি ট্রান দাই কুয়াং-এর বাংলাদেশ সফর এবং ২০১৫ সালের আগস্টে রাষ্ট্রপতির ভিয়েতনাম সফর এবং ২০১২ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর ভিয়েতনাম সফর দুই দেশের গঠনমূলক ও বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি শক্ত ভিত তৈরি করেছে।
দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ারম্যানের সফরে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
