দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর চট্টগ্রামে তিন সেবা সংস্থার উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কোথাও কাজ বন্ধ, কোথাও কাজ চলছে ধীরে ধীরে ও কোথাও উন্নয়ন কাজের নানা উপকরণের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে স্বাভাবিক গতিতে চলছে না উন্নয়ন কাজগুলো। তবে এসব বিষয় অনেকেই প্রকাশ করতে চান না। বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো চলমান।
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে অনেকটা থমকে আছে উন্নয়ন কাজ। ওই দিন হামলা ও ভাঙচুর করা হয় বিভিন্ন এলাকায়। এ সময় উন্নয়ন কাজের বিভিন্ন উপকরণ ভাঙচুর ও চুরি হয়। ভাঙচুর করা হয় চসিকের নগর অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের উপকরণ। সংস্কারের জন্য খনন করা নালা-নর্দমার মাটি পড়ে আছে। চুরি ও ভাঙচুর করা হয় ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের বিভিন্ন উপকরণ। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে নগর উন্নয়নে চসিকের একটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে কাজটি স্থবির হয়ে আছে। অনেক শ্রমিক কাজে আসছে না, অনেকে এলেও কাজ করছে না। তবে আমরা ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। গতকাল অনেকেই কাজে ফিরেছেন।
সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী রাজীব দাশ বলেন, বড় বড় উন্নয়ন কাজ প্রথম দিকে কিছুটা স্থবির ছিল। এখন সবাই কাজে ফিরেছে। সব কাজ পুরোদমে চলছে। বড় প্রকল্পগুলোর কাজে কোনো সমস্যা হয়নি। ওয়াসার এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করে বলেন, হালিশহর এলাকায় চলমান স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কিছু উপকরণ ভাঙচুর করা হয়েছে, কিছু মালামাল চুরিও হয়েছে। তবে এখন কাজ পুরোদমে চলছে। জানা যায়, চসিকের উদ্যোগে বর্তমানে চলমান বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে আছে, ২ হাজার ৪৯০ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকার ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প ও ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৬২ লাখ টাকার ‘বহদ্দার হাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন একটি খাল খনন’ শীর্ষক প্রকল্প।
সিডিএর চলছে, ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার মেগা প্রকল্প এবং ২ হাজার ৭৪৬ কোটি ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকার ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল’ শীর্ষক প্রকল্প। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম ওয়াসার চলছে ‘চট্টগ্রাম মহানগরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন’ শীর্ষক ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকার প্রকল্প। এগুলো ছাড়াও এ তিন সেবা সংস্থার আরও প্রকল্প চলমান আছে। দুর্বৃত্তরা সুযোগ বুঝে প্রকল্পের কাজের নানা উপকরণ ভাঙচুর ও চুরি করে।