শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নৈরাজ্য, হামলা, ভাঙচুর ও সাম্প্রদায়িক দাঙা সৃষ্টির প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সরব বিএনপি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় জেলা ও নগরীর বিভিন্ন উপজেলার মঠ মন্দিরে গিয়ে দিচ্ছেন শান্তির বার্তা। আশ্বস্ত করছেন যে কোনো সমস্যায় পাশে থাকার। বিএনপি নেতারা বলছেন, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। এখানে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক দাঙা সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
জানা গেছে, গতকাল লোহাগাড়া উপজেলায় সমাবেশ করেছে লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপি। সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করে কাজ করা হচ্ছে। দুষ্কৃতকারীরা কোনোভাবেই যেন অরাজকতার সৃষ্টি না করতে পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের কোনো নেতা-কর্মী যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট বা অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে চট্টগ্রামের ইসকন প্রবর্তক সংঘ, কাতালগঞ্জ বৌদ্ধ বিহার, ফিরিঙ্গিবাজার মন্দিরে শান্তির বার্তা নিয়ে গেছেন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানসহ নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়াও জেলার রাউজান উপজেলা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কর্মী-সমর্থক নিয়ে বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে কথা বলেছেন বিএনপির নির্বাহী সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী। নিজের মুঠোফোন নম্বর দিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য বলেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে যে কোনো সমস্যায়, আশ্বাস দিয়েছে এক ডাকে সাড়া দেওয়ার।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান মুসলমান আমাদের সবার একটাই পরিচয় আমরা সবাই বাংলাদেশি। এই দেশ আপনার, আমার, আমাদের সবার। এখানে সব ধর্মের বর্ণের মানুষের স্বাধীনভাবে বসবাস করার অধিকার আছে। একটি সরকার যাবে আরেকটি সরকার আসবে এটি একটি গণতান্ত্রিক ধারা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি বিশেষ মহল পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও উপাসনালয়গুলোতে হামলার অপচেষ্টা করে, বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের চেষ্টা করছে দুর্বৃত্তরা। স্বৈরাচারী হাসিনার পতন হলেও ভিন দেশীয় ইন্ধনে তাদের প্রেতাত্মা ও দোসররা নানারকম চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে নাশকতা সৃষ্টি করে সর্বসাধারণের গ্রহণযোগ্য ও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বিএনপিকে দায়ী করার ষড়যন্ত্র চলছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের নাশকতা প্রতিহত করতে বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে।