চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতিতে আশা জাগাচ্ছেন তরুণ নেতারা। তরুণদের নেতৃত্ব দেওয়ার যে প্রবণতা, তা বিএনপিতে সবার আগে রয়েছে বন্দর শহর চট্টগ্রামে। এ তরুণ নেতারা নিজেদের মেলে ধরছেন নেতা-কর্মীদের মাঝে। ফলে দারুণ জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষের মধ্যেও। এসব নেতার বেশির ভাগের আবির্ভাব উত্তরাধিকারসূত্রে হলেও দলের দুর্দিনে কান্ডারির ভূমিকায় ছিলেন তাঁরা। দলের হয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ময়দানে সরব উপস্থিতিতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। তাঁদের হাত ধরেই পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ জি এম নিয়াজ উদ্দীন বলেন, ‘চট্টগ্রামে যাঁরা এখন বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত অনেকেই ছাত্ররাজনীতি শেষ করে বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কেউ স্থানীয় পর্যায়ে আবার কেউ কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এ তরুণ নেতাদের মাধ্যমে আমরা একটি শিক্ষিত নেতৃত্ব পাচ্ছি আগামী দিনের জন্য।’
জানা যায়, চট্টগ্রামে তরুণ বয়স থেকে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় নগর বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা ডা. শাহাদাত হোসেন। এমপি ও মেয়র নির্বাচনে প্রমাণ করেছেন নিজের জনপ্রিয়তা। দলীয় প্রধানের আস্থায় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকও হয়েছেন।
এ ছাড়া বিএনপির প্রবীণ নেতা মীর নাছির উদ্দীনের সন্তান মীর হেলাল উত্তরাধিকারসূত্রে রাজনীতিতে এলেও রাজপথে বিগত সময়ে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন; যার কারণে দলের কেন্দ্রীয় সদস্য থেকে পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সন্তান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী। তরুণ নেতা হিসেবে পুরো চট্টগ্রামে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে তাঁর। পিতার রাজনৈতিক সহকর্মীদের নিয়ে রাজনীতিতে আসতে না আসতেই জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন হুম্মাম।
একইভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন সাবেক হুইপ প্রয়াত সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেত্রী ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা। কয়েক বছর দেশ থেকে নির্বাসিত থাকলেও নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সন্তান বিএনপির পররাষ্ট্র কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী ক্লিন ইমেজের সজ্জন ও পরিচ্ছন্ন তরুণ নেতা হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন। এ ছাড়া সম্ভাবনাময় তরুণ নেতা হিসেবে আলোচনায় আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সন্তান সাঈদ আল নোমান। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সন্তান সামির কাদের চৌধুরীও রাউজানে বেশ জনপ্রিয়।
এদিকে উত্তরাধিকার ছাড়াই মাঠে ময়দানে রাজনীতি করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এমন নেতাও কম নেই চট্টগ্রামে। যাঁরা ছাত্র বা যুব রাজনীতির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিতে সক্রিয়। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি এম এ হাশেম রাজু, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহভাপতি আহমেদ উল আলম চৌধুরী রাসেল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নগর ছাত্রদলের সভাপতি সম্পাদক গাজী সিরাজ উল্লাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুদ্দীন সালাম মিঠু এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক লেয়াকত আলী বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।