অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামী সোমবার বৈঠকে বসবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত ২৭ দেশ ও ঢাকাস্থ ইইউ মিশন প্রধানসহ ২৮ রাষ্ট্রদূত। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতদের এটাই প্রথম সম্মিলিত বৈঠক। গতকাল বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামী সোমবার (৯ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইইউর ২৭টি দেশের রাষ্ট্রদূত (২০ জন অনাবাসী রাষ্ট্রদূতসহ) এবং ইইউ মিশন প্রধানসহ ২৮ জন কূটনীতিক সম্মিলিতভাবে বৈঠক করবেন বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। ইইউর সব সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত একত্রিত হয়ে সরকারপ্রধানের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগটি এবারই প্রথম। এ উদ্যোগ বাংলাদেশ ও ইইউর সম্পর্কে আরও সুসংহত করবে।
মুখপাত্র বলেন, আসন্ন বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউভুক্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলো এবং ইইউর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক পর্যালোচনা, সহযোগিতার নতুন ও সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী জিএসপি প্লাস বাণিজ্য সুবিধাদি, জলবায়ু পরিবর্তন সৃষ্ট অস্তিত্ব সংকট মোকাবিলা, দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি একটি টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে উভয়ের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমেরিকার নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। পাঁচ দশকের সম্পর্ক পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কোনো ক্ষমতাসীন দলের ওপর নির্ভর করে না। আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আগেও কাজ করেছি। মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কার্যক্রম সীমিত থাকার কারণে নয়াদিল্লির বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া দূতাবাস থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত বুলগেরীয় দূতাবাস থেকে ৮৬ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ভিসা প্রদানে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদানের কথা জানিয়েছে বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া রোমানিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে অবস্থিত রোমানিয়া দূতাবাস থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদান করছে।
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে রফিকুল আলম বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আমাদের যে ভূমিকা নেওয়ার কথা, তা প্রয়োগ করার সময় এখনো আসেনি। শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার ক্ষেত্রে আমরা একটা অংশ মাত্র। আমাদের যে অংশে ভূমিকা পালন করার কথা, তা প্রয়োগ করার সময় এখনো আসেনি। ওইটা যখন আসবে তখন আমরা করব।
পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, এফওসিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে যত উপাদান আছে, সবগুলোই রাখার চেষ্টা করা হয়। এখন পর্যন্ত বাণিজ্য, কানেক্টিভিটি, সীমান্ত উত্তেজনা, পানিবণ্টন ইস্যু আলোচনায় রয়েছে। এ ছাড়াও অনেক উপাদান নিশ্চয়ই আছে, এই মুহূর্তে আমার কাছে সেটা নেই।
যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগের সমাবেশে শেখ হাসিনার ভার্চুয়ালি অংশ নেওয়ার বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। তিনি ভারতে আছেন, ভারত সরকার কীভাবে এটা হ্যান্ডেল করছেন, তারা এটা ভালো বলতে পারবেন।