দিনে-রাতে মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ খুলনার জনজীবন। ঘরে-বাইরে সব জায়গায় মশার কামড় সহ্য করতে হয়। সিটি করপোরেশন মশা মারার ওষুধ ছিটালেও তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রায় ২৭ লাখ টাকার লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্টিসাইড ওষুধ কেনা হয়েছে দিনা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। ওষুধের মান খারাপ হওয়ায় কনজারভেন্সি বিভাগে দায়িত্বে রদবদল আনা হয়েছে।
জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে মশার ওষুধ সরবরাহ কাজে ফাঁকিবাজির ঘটনায় সিটি করপোরেশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনা এন্টারপ্রাইজকে ‘ব্ল্যাক লিস্টেট’ করে। কিন্তু কৌশলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে প্রথম দফায় ৩ হাজার লিটার অ্যাডাল্টিসাইড ওষুধ কেনা হয়। যার মূল্য প্রায় ১৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া দ্বিতীয় দফায় আরও ৮ লাখ টাকার লার্ভিসাইড ওষুধ সরবরাহের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. আবদুল আজিজ জানান, নভেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর যাচাই করলে অ্যাডাল্টিসাইড ওষুধে ত্রুটি দেখা যায়। এটা ছিটালেও মশা মরত না। ফলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দিয়ে ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তারা নতুন করে কিছু স্যাম্পল পাঠায় ও ওষুধের ফর্মুলেশনে (মিশ্রণ) অ্যাডাল্টিসাইডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে বলে। তবে অ্যাডাল্টিসাইড মাত্রা বাড়ালে তা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ ছাড়া মশক নিধনে আগে যে গ্রুপের ওষুধ কেনা হতো তা বাদ দিয়ে অন্য গ্রুপের ওষুধ কেনা হচ্ছে। যার মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ প্রতিষ্ঠানটি এখন থেকে যেসব ওষুধ সরবরাহ করবে তা যাচাই করা হবে। আর কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম বলেন, মশক নিধনে ওষুধের কার্যকরী মান খারাপ থাকায় তা’ পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন দুই শিফটে কর্মীরা মশা দমনে ওষুধ স্প্রে করছেন।
উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে খুলনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩১২০ জন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও ১২৮৪ জন। সর্বশেষ খবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২৬ জন।