নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এক চীনা নাগরিকসহ দুই মানব পাচারকারী আটক হয়েছেন। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে পাচার হতে যাওয়া গার্মেন্ট শ্রমিক তিন তরুণীকে। আটক ব্যক্তিরা হলেন চীনা নাগরিক লি ওই হাও (৩০) ও তার সহযোগী দোভাষী কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ফরিদুল ইসলাম (৩২)। পাচারকারী চক্রের খপ্পর থেকে উদ্ধার তরুণীদের দুইজন কেন্দুয়া পৌর এলাকার কমলপুরের বাসিন্দা, অপরজন জামালপুরের মেলান্দহের বাসিন্দা। তিনজনই ঢাকায় একই গার্মেন্টে চাকরি করেন।
লি ওই হাও এবং ফরিদুল ইসলামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে নানান তথ্য। জানা যায়, মানব পাচারকারকারী চক্রের সদস্য লি ওই হাও তাদের নিজস্ব এজেন্ট দিয়ে ঢাকায় গার্মেন্টে কর্মরত নেত্রকোনার এক নারী শ্রমিককে বিয়ের পর চীন নিয়ে যাবে এমন প্রলোভন দেখায়। প্রলোভনে ওই তরুণী বিয়ে করতে রাজি হয়। পরে ওই চীনা নাগরিক ১ সেপ্টেম্বর সাদা কাগজে সই নিয়ে তরুণীকে বিয়ে করেন। সেই সঙ্গে তরুণীর এক খালাতো বোনসহ আরও এক তরুণীকে চীনে নিয়ে যাওয়ার জন্য মোট তিনজনের পাসপোর্ট তৈরি করেন। ‘সবাই সুখে থাকবে’ এমন প্রতিশ্রুতিতে অন্যরাও রাজি হলে ওই তরুণীর বাবা ঢাকায় যান। এ সময় তিনি চীনা জামাইকে বাড়িতে আসার দাওয়াত দেন।
গত রবিবার দোভাষী ফরিদুল ইসলামকে নিয়ে প্রাইভেট কারযোগে কেন্দুয়া পৌর এলাকার কমলপুরে ওই তরুণীর বাড়িতে আসেন চীনা নাগরিক লি ওই হাও। নতুন জামাইকে আপ্যায়নের একপর্যায়ে বিয়ের কাগজপত্র দেখতে চান বাড়ির লোকজন। কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হলে বিষয়টি রাতেই পুলিশকে জানান তারা। এরপর পুলিশ গিয়ে দুজনের কাগজপত্র চেক করে তা জাল হওয়ায় তাদের আটক করে।
এদিকে চীনে নিয়ে অনৈতিক ব্যবসার লক্ষ্যেই একটি আন্তর্জাতিক চক্র কাজ করছে বলে পুলিশের ধারণা। নানা প্রলোভনে সুন্দরী তরুণীদের বিদেশে নিয়ে যায় চক্রটি। এই চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নেত্রকোনা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) হাফিজুল ইসলাম।