সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদানসহ তিন দফা দাবিতে অনশন শুরু করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে দাবি আদায় না হলে এবার প্রশাসনের পদত্যাগে এক দফা দাবি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
গতকাল দুপুর ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত সোমবার পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)। বাগছাসের সংবাদ সম্মেলনে গতকাল থেকে অনশন কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছিল।
অনশনে অংশ নেওয়া জবি বাগছাসের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, মন্ত্রণালয়ের সব শিকল ভেঙে জবিয়ানদের অধিকার আটকে আছে জবি প্রশাসনের কাছে। সিদ্ধান্ত একান্ত জবি প্রশাসনের, তারা আমাদের অধিকার বাস্তবায়ন করবে কি না? আমরা জানতে পেরেছি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে না পারার কারণেই মূলত আমরা অধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা বিভিন্নভাবে কাটছাঁট করে শিক্ষাবৃত্তি আনার চেষ্টা করতে চাইছে যা আমরা কখনোই মেনে নেব না।
আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, আমাদের সঙ্গে সম্পূরক বৃত্তি নিয়ে যে নাটক শুরু করা হয়েছে সেটির দ্রুত সমাপ্তি চাই। ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকার জকসু, কিন্তু প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। প্রশাসনকে দ্রুত তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানাচ্ছি। ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি ও লাইব্রেরির আধুনিকায়নের দাবি আমরা বহুদিন ধরে জানিয়ে আসছি কিন্তু প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, আমরা এত দিন অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি করলেও প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না।
অনশনকারীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কবে থেকে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট করতে হবে; জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে; ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান করে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করে বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন হবে। আমরা নিয়মিত যোগাযোগ করছি।
শিক্ষার্থীরা লিখিত রোডম্যাপ চাইলে উপাচার্য বলেন, আমাদের নীতিমালা পাঠানো হয়েছে। সেটা অনুমোদন হলেই রোডম্যাপ দেব। তা না হলে সেই রোডম্যাপের কোনো ভিত্তি থাকবে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো জকসু বিধি শিগগিরই অনুমোদন হবে আশা করছি। অনুমোদিত বিধি অনুসারে ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে আশা করি আগামী জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দিতে পারব। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) অনশন চলছিল।